Saturday, September 28, 2024

বল্টু

 ●বল্টু : আমার একটা সমস্যা হচ্ছে।

ডাক্তার : কি..?
বল্টু : যখন যার সাথে কথা বলি তাকে
দেখতে পাইনা।
ডাক্তার : কখন এরকম হয়..? বল্টু: যখন
ফোনে কথা বলি।



.
●খুব মশা কামড়াচ্ছে বলে রেগে
গিয়ে বল্টু বিষ খেয়ে
নিলেন। ....বললেন, নে এবার রক্ত খা,
খেলেই মরবি। .
●জেলকর্তা : কাল তোমার ভোর ৫
টায় ফাঁসি হবে।
এটা শুনে বল্টু হেসে ফেললেন।
জেলকর্তা : হাসছ কেন..?
বল্টু : আরে ধুর !
আমি সকাল ৯ টার আগে উঠিই না। .
●বল্টু সবজি কিনতে বাজারে
গেছেন.....
সবজি ওয়ালা সবজির ওপর জল
ছেটাচ্ছিলেন। তা দেখে বল্টু
কিছুক্ষণ চুপ করে দাড়ালেন। একটু পরে
বললেন, ''ওদের জ্ঞান যদি ফিরে
আসে, থাহলে ওখান থেকে এক
কিলো দিয়েন
তো।"
.
●বল্টু এটিএম থেকে টাকা তুলছিলেন।
পিছন থেকে আরেকজন বললেন,
"হে...হে ! আমি
আপনার পাসওয়ার্ড দেখে নিয়েছি,
ওটা হলো চারটে অ্যাসটেরিকস (****)
বল্টু : 'হাহা ! আপনি ভুল,
ওটা হলো ২৭৮৬'
.
●পুলিশ : আপনি বিবাহিত..? বল্টু : হ্যা,
একজন মহিলার সাথে। পুলিশ : আরে !
সেতো বটেই, কেউ কি ছেলের
সাথে বিয়ে করে নাকি..? বল্টু : হ্যা
,করেছে তো ! আমার বোন।
.
●হাসপাতালে নার্স : অভিনন্দন,
আপনার ঘরে ছেলে হয়েছে। বল্টু :
আরিবাবা ! কি টেকনোলজির যুগ,
বিবি
হাসপাতালে আর আর ছেলে ঘরেই
হলো । .
●বল্টু একটা মাছির ডানা কেটে
দিয়ে তাকে উড়তে বললেন, কিন্তু
মাছি উড়ল না।
বল্টু : তাহলে এখান থেকে প্রমানিত
হলো যে, ডানা কেটে দিলে মাছি
শুনতে পায় না।
.
●ম্যারাথন দেখতে গিয়ে বল্টু : আচ্ছা
এত লোক দৌড়াচ্ছে কেন..? ব্যক্তি :
এটা ম্যারাথন হচ্ছে, সবাই দৌড়াচ্ছে,
চ্যাম্পিয়ন পুরস্কার পাবে। বল্টু : শুধু
চ্যাম্পিয়নই যদি পুরস্কার পায়, তাহলে
বাকিরা দৌড়চ্ছে কেন..?
.
●বল্টু একটা পিজ্জা অর্ডার
দিয়েছেন।
বেয়ারা : স্যার, এটাকে আট পিস করব,
না চার পিস..?
বল্টু : চারই করে দে, আটটা বড্ড বেশি
হয়ে যাবে, খেতে পারব না...।।

আমার আমি - কামরুন নাহার মিশু

 একদিন মেয়ের বাবা রাতের ১১টায় বাসায় ফিরলেন হাতে করে দুটো বার্গার নিয়ে।

এসেই হাসিমুখে জানান দিলেন রাতে ভাত খাবেন না। তিনি রেস্টুরেন্ট থেকে খেয়েই এসেছেন। আসার সময় বাচ্চাদের জন্য বার্গার নিয়ে এলেন।
আমি কোনো মতামত বা আনন্দ উচ্ছাস কিছুই ব্যক্ত না করে নির্বিকার ভঙ্গিতে প্যাকেট খুলে একটা বার্গার নিয়ে খাওয়া শুরু করলাম। যদিও বার্গার খাবারটা আমার বাচ্চাদের যতটা পছন্দ আমার ততটা নয়।
তারপরও আমি খাচ্ছিলাম। কারণ আমি চাইনি প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হোক।
খুব ছোটবেলায় দেখতাম আমার আব্বা কোনো খাবার কোনো উপহার বা যে কোনো জিনিস আমাদের চার ভাই বোনদের জন্য কিনতেন। আমার মায়ের জন্য কিনতেন না।
যেমন তিনি দোকান থেকে চারটা আইসক্রিম, চার প্যাকেট চিপস আমাদের চার ভাই -বোনের জন্য কিনতেন। অথচ বাসায় আমরা পাঁচজন মানুষ থাকতাম।
আমার মা হাসি মুখে চিপসের প্যাকেট খুলে আমাদের হাতে দিতেন। আইসক্রিম হাত থেকে পড়ে নস্ট হয়ে যাবার ভয়ে আমাদের গাইড করতেন পিছন থেকে খাও, সামনে থেকে খাও!
জানি না আমার মায়ের খেতে ইচ্ছে করত কি-না! না করার তো কথা নয়। তিনি গৃহবধূ। সারাক্ষণ আমাদের সাথে ঘরেই থাকতেন। নিজের হাতে বানানো খাবারই খেতেন। কখনো তো একা একা বাইরে যাননি বা নিজের ইচ্ছের প্রতিফলন করেননি।
আপনি যখন চারটা কিনতে পেরেছেন, তখন পাঁচটাও কিনতে পারতেন। তার মানে স্বদিচ্ছার অভাব ছিল।
পুরুষ জাতি ধরেই নিয়েছে, মেয়েদের খেতে হয় না।
আমার সংসারে কিন্তু আমি এটা হতে দেইনি। মেয়ের বাবা দুইটা ওয়েফার আনলে তার সামনে একটা খুলে আমি খাওয়া শুরু করতাম। যদিও খেতাম না।
তাকে চোখে আঙুল দিয়ে বুঝিয়ে দিয়েছি। বাসায় আমরা তিনজন থাকি যে কোনো খাবার তিনটাই আনবা। ঐ জিনিস আমি না খেলে বিকল্প আরেকটা আনবা যেটা আমি খাই।
কারণ আমিও মানুষ। আমারও পছন্দ আছে, ইচ্ছে আছে, অনুভুতি আছে। বছরের পর বছর তোমার সংসারে গাছের গুঁড়ি হয়ে পড়ে থাকব?
তুমি যদি আমাকে না বুঝ তাহলে তো কেউই বুঝবে না।
একটা মেয়ের বিয়ের আগের সকল আবদার থাকে বাবা মার কাছে। বিয়ের পরে থাকে স্বামীর কাছে। বাবা- মার কাছে যতটা প্রাণ খুলে আবেগ প্রকাশ করা যায়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে স্বামীর কাছে যায় না। স্বামী নামক প্রিয়জনকেই সেটা বুঝে নিতে হয়।
আমার আব্বা কারো বাড়ি গিয়ে এককাপ চাও খেতেন না আমাদেরকে ছাড়া। তিনি ভীষণভাবে চাইতেন তিনি যেখানেই দাওয়াত খেতে যান যেন আমরা চার ভাই-বোনও সেখানে যেতে পারি। কোনো কারণে আমাদেরকে ছাড়া যেতে হলে, তিনি বাড়ি ফিরেই আমাদেরকে নিয়ে হোটেলে চলে যেতেন। সেইম খাবার আমাদের খাইয়ে আনতেন। অথচ আমার মাকে নিয়ে তাঁর তেমন কোনো ভাবনা ছিল না।
আমাদের যৌথ পরিবার ছিল। আব্বা শাড়ি কিনলে পাঁচটা কিনতেন। তিন ফুফুর জন্য তিনটা, মায়ের জন্য একটা, দাদীর জন্য একটা। দাদীকে দেয়ার জন্য তাঁর আরও সন্তান ছিলেন। ফুফিদের স্বামী ছিলেন। কিন্তু আমার মায়ের স্বামী ছাড়া আর কেউ ছিল না।
দিন শেষে আমার মাই ঠকত।
অথচ আমিও যৌথ পরিবারে থাকি। কন্যার বাবাও সেইম কাজ করেন। একদিন ড্রেস আনার পর আমি পাঁচটাই রেখে দিয়েছি। তাকে বললাম ' ভাবীদেরকে কাল এনে দিও। আমার পাঁচটাই পছন্দ হয়েছে।' সে চোখ বড় করে আমার দিকে তাকিয়ে ছিল।
আমি মনেমনে বলছি, ইচ্ছে হলে চোখ বের করে ফেল। আমি তোমার স্ত্রী। তোমার উচিত কিছু পোষাক সবাইকে গিফট করা ছাড়াও আমার জন্য কেনা।
তুমি যখন সেটা বুঝতে পারনি। আমিই চোখ গেলে বুঝিয়ে দিলাম।
বাচ্চার বাবা কখনো ওদেরকে নিয়ে কোথাও যায় না। কখনো যাবেও না। প্রতি সপ্তাহে দুটো- চারটা দাওয়াত থাকে। দুপুরবেলা বেশির ভাগ সময় বাইরেই খান।
একদিন এত মেজাজ খারাপ হলো। যখন শুনলাম একটা দাওয়াতে সবার পরিবার ছিল। শুধু তিনি একা ছিলেন। ঐ দিনই আমি কারো অনুমতি না নিয়েই রেডি হয়েই বাচ্চাদেরকে নিয়ে বাইর থেকে ঘুরে এলাম। বাচ্চাদেরকে রেস্টুরেন্ট থেকে খাইয়ে আনলাম।
নারীদের জীবন কখনো মসৃন হয় না। এ জীবনের পরতে পরতে বন্ধুরতা। কেউ আপনার ইচ্ছে, অনিচ্ছের মূল্য দিবে না। আপনার জায়গা আপনাকেই করে নিতে হবে। হয় বুদ্ধি দিয়ে না হয় বিচক্ষণতা দিয়ে।
কারণ অধিকাংশ পুরুষ তো নারীদের মানুষই মনে করে না।

source: https://www.facebook.com/100090898814748/posts/459574353749188/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

রানীর জীবন কাহিনী

ফেরদৌস আহমেদ 


পাঁচ বছরের ছোট্ট খুকি নাম হল তার রানী

পাশের বাড়ির মজনু মিয়া ডাকে তারে নানি।
রানী না কি দেখতে তাহার মরা নানির মত
মজনু মিয়া তাই রানীরে আদর করে এত!
আদর কইরা তাই রানীরে লইয়া যায় সে হাটে
এটা সেটা মজা খাওয়ায় সোহাগ চুমু কাটে।
মাঝে মাঝে কান্ধে নিয়া গাঁয়ের পথে ঘোরে
গোসল করতে নদীর ঘাটে যায় সে নিয়ে ক্রোড়ে।
রানীর জন্য নিয়ে আসে নিজের গাছের কলা
খেলনা আনে আশে পাশে হইলে কোথাও মেলা।
হঠাৎ সেদিন দিনের শেষে সন্ধ্যা নামার পরে
বাপ মা দেখে তাদের রানী ফিরছে না আর ঘরে।
এক নিমিষে পাড়ায় পাড়ায় হইল জানা জানি
কোথায় না কি হারিয়ে গেছে মজনু মিয়ার নানি।
কেউ বা খুঁজে নদীর ঘাটে কেউ বা কুসুম বাগে
মজনু মিয়া পাগল হয়ে চলছে সবার আগে।
সবাই মিলে খুঁজল সারা গাঁয়ের জলে স্থলে
পাইল না আর রানীর দেখা দু'দিন গেল চলে।
সবাই কাঁদে মিষ্টি রানীর মিষ্টি স্মৃতি লয়ে
বাপ মা তাহার পড়ে আছে স্তব্ধ পাথর হয়ে।
মজনু মিয়ার দু চোখ বেয়ে ঝরছে নোনা পানি
মুখে তাহার একই বিলাপ হায় নানি হায় নানি!
এমন সময় কইল এসে ছোট্ট শিশু তোতা
গাঙ্গে না কি ভাইসা আছে রানীর পায়ের জুতা।
সবাই তখন দৌড়ে গিয়ে দেখে নদীর কাছে
ঝোপের ভিতর রানীর পঁচা লাশটা পড়ে আছে।
এমন করে রানীর জীবন হইল যখন শেষ
তখন থেকে মজনু নানাও হইল নিরুদ্দেশ।
মেয়ে শিশু দেওয়ার আগে পুরুষ লোকের কোলে
দয়া করে এই ঘটনা কেউ যেওনা ভুলে ।


এই কবিতার গল্প এবং চরিত্রের নাম কাল্পনিক।

https://www.facebook.com/100077505699680/posts/565187256074793/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

নীরদ সি চৌধুরী

 একবার এক বাংলা দৈনিকে বিখ্যাত বাঙালি মনীষীদের একটি নামের তালিকা প্রস্তুত করলেন নীরদ সি চৌধুরী। আশ্চর্যের বিষয় বিদ্যাসাগর কে তালিকায় রাখলেন না। প্রবল বিতর্কের ঝড় উঠল নীরদচন্দ্র নিজের যুক্তি দিলেন ,সেই যুক্তি মোটেও বাঙালি মান্যতা দেয়নি। একশোর বেশি বছর বেঁচেও নীরদ সি চৌধুরী কোনওদিন বাঙালির আপনজন হতে পারেন নি।

© ধ্রুবতারাদের খোঁজে
নীরদ সি চৌধুরী আপাদমস্তক ব্রিটিশ ভক্ত। আর সেকারণেই তাঁর দিকে ধেয়ে এসেছে অনেক সমালোচনা। তিনি সাম্রাজ্যবাদীদের শেষ সমর্থক, ব্রিটিশভক্ত দালাল ইত্যাদি । সত্যিই তো তিনি 'অটোবায়োগ্ৰাফি অফ অ্যান আননোন ইন্ডিয়ান'এ ইংরেজদের প্রশস্তি করেছেন ।সরকারি চাকরি থেকে একসময় বরখাস্ত হয়েছেন ।বাঙালি সম্পর্কে ভয়ঙ্কর কথা লিখেছেন ‘বাঙালী থাকিব নাকি মানুষ হইব’।
সমসাময়িক সমালোচকরা বলেন নীরদচন্দ্র অসম্ভব পণ্ডিত মানুষ, কিন্তু ভয়ঙ্কর উন্নাসিক। নিজেকে সকলের থেকে আলাদা দেখানোর একটা বিচিত্র মানসিকতা তাঁকে সারাজীবন তাড়া করে বেরিয়েছে।
সত্যি কী তাই? তাঁর বন্ধুরা কি বলছেন তাঁর সম্বন্ধে?
সাংবাদিক, সম্পাদক,পরিমল গোস্বামীর বক্তব্য নীরদ সি চৌধুরীর মত খুঁতখুঁতে এবং পছন্দ অপছন্দের এমন প্রবণতা কারও মধ্যে তিনি দেখেন নি।মনে প্রাণে ইংরেজ ধর্মী।ইংরেজ জীবনের যা কিছু শ্রেষ্ঠ তাকে আদর্শ জেনে সব কিছু বিচার করতেন। ইংরেজি ছাড়াও ফরাসী,জার্মান ভাষা খুব ভাল জানতেন। তিনি সত্যিই অনেক জানতেন। সাহিত্য, শিল্প, বিজ্ঞান, সঙ্গীত, ইতিহাস, ভূগোলের সব তথ্য তাঁর জানা ছিল কেবল নয় সব বিষয়ে স্বাধীন চিন্তা ও নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতেন দৃঢ় ভাবে । পরিমল গোস্বামীর মতে নীরদবাবুর মত 'স্পেশালিষ্ট ইন জেনারেল নলেজ ' কল্পনা করা শুধু ভারতে নয় দুঃসাধ্য ছিল বিদেশেও।
© ধ্রুবতারাদের খোঁজে
সত্যি বলতে নীরদচন্দ্র যেমন বুঝেছেন, তেমন লিখেছেন। কী ব্রিটিশ কী ভারতীয়। ফলে দু’দেশেই যেমন তিনি পুরস্কার পেয়েছেন তেমন তাঁর কপালে তিরস্কার জুটেছে। একসময কোনও স্থায়ী চাকরি করতেন না। এদিক ওদিক পত্র পত্রিকায় ছিটেফোঁটা লিখে সামান্য উপার্জন। প্রায় সবটাই চলে যেত পাশ্চাত্য সঙ্গীতের রেকর্ড আর বইপত্র কিনতে। সংসারে টানাটানি। হাত পড়েছে স্ত্রীর গয়নাতেও। পরে কখনও আর্মি অ্যাকাউন্টস বিভাগে, কখনও বা শরৎচন্দ্র বসুর সচিব রূপে, আবার কখনও অল ইন্ডিয়া রেডিয়োতে যুদ্ধের ভাষ্যকারের চাকরি করেছেন।নীরদচন্দ্র খুব জাঁক করে বলতেন, “এক বর্ণ ইংরেজিও আমি কোনও ইংরেজের কাছে শিখি নাই। যা শিখিয়াছি সবই গ্রামের পাঠশালার গুরুমশাইদের কাছ থেকে।”
বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ' পথের পাঁচালী ' প্রকাশের জন্য প্রকাশক পাওয়া যাচ্ছে না। উদ্যোগ ছিল নীরদ সি চৌধুরীর। সজনীকান্ত দাস ঘোষণা করলেন 'পথের পাঁচালী 'তিনি প্রকাশ করবেন। কপিরাইট হিসেবে তখন বাংলা বইয়ের লেখকরা পেতেন পঁচিশ -তিরিশ টাকা। রত্ন চিনতে সজনীকান্তের ভুল হয় নি। অনুভব করতে পেরেছিলেন নীরদ সি চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলা সাহিত্যের অমর কৃতিত্ব স্থাপন করেছেন।'পথের পাঁচালী'র কপিরাইট হিসেবে বিভূতিভূষণ কে দেওয়া হয় তিন শত টাকা। ২ অক্টোবর ১৯২৯ বুধবার প্রকাশিত হল 'পথের পাঁচালী ' লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রকাশক সজনীকান্ত দাস।সেই কৃতজ্ঞতা স্বীকার করেছেন লেখক স্বয়ং। বিভূতিভূষণের ডায়েরীতে লেখা আছে। "২৮শে জুলাই, ১৯২৯ রবিবার.... এই বইখানার আর্ট অনেকেই ঠিক বুঝতে না পেরে ভুল করেন।দেখে ভারী আনন্দ হলো সজনী কাল কিন্তু আর্টের ধারাটা আমার বুঝে ফেলেছে।আর্টকে বুদ্ধির চেয়ে হৃদয় দিয়ে বুঝতে চেষ্টা করলে বোঝা যায় বেশী"।
পরিমল গোস্বামী ,নীরদ সি চৌধুরীর সম্পর্কে লিখেছেন বন্ধু -ঘনিষ্ঠরা কোনও বিষয়ে জানতে দ্বিধা না করে নীরদ সি চৌধুরীর কাছে যেতে পারতেন। তিনি যেমন সাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন , তেমন ঘনিষ্ঠ ছিলেন সজনীকান্ত দাস,পরিমল গোস্বামীর। আজ নীরদ সি চৌধুরীর প্রয়াণ দিবস।
কলমে ✍🏻 অরুণাভ সেন।।
© ধ্রুবতারাদের খোঁজে

নজরুল ইসলাম বাবু

 সব ক'টা জানালা খুলে দাও না -

----------------------------------------------------
“একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার, সারা বিশ্বের বিস্ময়
তুমি আমার অহংকার।”
–নজরুল ইসলাম বাবু
নজরুল ইসলাম বাবু এদেশের এক কিংবদন্তি গীতিকারের নাম।



আমাদের সংস্কৃতি আর সুরের ভুবনে যিনি স্মৃতির চাদর ছড়িয়ে গেছেন।
কালের বিবর্তনে বর্তমান প্রজন্ম এবং অনেক মানুষই ভুলে গেছেন এই প্রিয় মানুষটির কথা।
অথচ ওনার লেখা গান আজও এদেশের সঙ্গীতের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে। আমাদের বিখ্যাত দেশাত্মবোধক গান ‘সব ক'টা জানালা খোলে দাওনা’ গানটি সুর করেছেন শ্রদ্ধেয় আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল এবং গানটি গেয়েছেন বাংলা সঙ্গীতের কিংবদন্তি শিল্পী সাবিনা ইয়াসমিন। এই অমর গানটি নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা।
দেশাত্মবোধক গান ‘আমায় গেঁথে দাওনা মাগো একটি পলাশ ফুলের মালা’ গানটির সুরকার দেশের মেলোডি কিং শ্রদ্ধেয় আলাউদ্দিন আলী, কন্ঠ দিয়েছেন রুনা লায়লা; ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’ গানটির সুরকার অজিত রায়, কন্ঠ দিয়েছেন সাবিনা ইয়াসমিন।
এছাড়াও চলচ্চিত্রের কালজয়ী গান ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো সে কথা তুমি যদি জানতে’ দেশের সুস্থ এবং শুদ্ধ গানের প্রতিভাময় গায়ক সুবীর নন্দীর গাওয়া গানটির সুর করেছেন শ্রদ্ধেয় সুরকার আলী হোসেন, এবং সুবীর নন্দীর মহানায়ক খ্যাত বিখ্যাত গান ‘পৃথিবীতে প্রেম বলে কিছু নেই’ গানটির সুরকার শ্রদ্ধেয় শেখ সাদী খান, এমন অনেক কালজয়ী বিখ্যাত গানের স্রষ্টা ‘নজরুল ইসলাম বাবু’।
নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা গান গেয়ে অনেক শিল্পীই হয়েছেন নন্দিত, জনপ্রিয়, বিখ্যাত। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে অনেকেই ভুলে গেছেন অকালপ্রয়াত এই হৃদয়বান মানুষটিকে।
জন্ম ১৯৪৯ সালের ১৭ জুলাই বৃহত্তর ময়মনসিংহের জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার চরনগর গ্রামের মাতুলালয়ে। তাঁর পৈত্রিক ভিটা একই উপজেলার হেমাড়াবাড়ি গ্রামে।
পিতা বজলুল কাদের, মাতা রেজিয়া বেগম। পিতা বজলুল কাদেরের সঙ্গীতানুরাগ ছোটবেলা থেকেই বড় সন্তান নজরুল ইসলাম বাবুকে প্রভাবিত করে।
১৯৭১ সালে তিনি দেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীন হলে তিনি আবার লেখাপড়া, সাহিত্য ও সংগীত চর্চা শুরু করেন।
১৯৭৩ সালে আশেক মাহমুদ কলেজ থেকে বিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন। ওই একই বছরে তিনি বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে গীতিকার হিসেবে তাকিাভুক্ত হন।
এরপর একে একে লিখতে থাকেন দারুন সব গান, যার মধ্যে ‘সব কটা জানালা খুলে দাও না’ এবং ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’ অন্যতম।
সবকটা জানালা খুলে দাওনা’ গানটি তৎকালিন সময়ে বাংলাদেশ টেলিভিশনের খবর এবং বিভিন্ন সৃজনশীল অনুষ্ঠানের সূচনা সঙ্গীতে ব্যবহৃত হত। পরবর্তীতে এই গানটি চিত্র পরিচালক কাজী হায়াত ১৯৯২ সালে ‘সিপাহী’ ছবির টাইটেলেও ব্যবহার করেছিলেন।
এই গানটি ছাড়াও নজরুল ইসলাম বাবু’র লিখা দেশাত্মবোধক গানগুলোও আজও বিভিন্ন জাতীয় দিবসে গাওয়া হয়।
কণ্ঠশিল্পী দিলরুবা খানের কণ্ঠের ঝড় তোলা ‘দুই ভুবনের দুই বাসিন্দা’ গানটিও নজরুল ইসলাম বাবুর লিখা। তিনি বাংলাদেশ গীতিকবি সংসদের প্রথম কার্যনির্বাহী পরিষদ (১৯৭৮-৭৯) এর সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। ১৯৭৮ সালে সুরকার আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের সাথে তিনি প্রথম
চলচ্চিত্রে গান লিখতে শুরু করেন।
চলচ্চিত্রে নজরুল ইসলাম বাবুকে আমরা পেয়েছি ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘মহানায়ক’, ‘প্রতিরোধ’, ‘উসিলা’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘প্রেমের প্রতিদান’ এর মতো দারুন সব চলচ্চিত্রের দারুন দারুন সব গানে।
শুধু বাংলাদেশের সাবিনা ইয়াসমিন , রুনা লায়লা ,সুবীর নন্দী, এন্ড্রু কিশোরের মতো শিল্পীরাই নয় নজরুল ইসলাম বাবুর লেখা গানে কন্ঠ দিয়েছেন কুমার শানু, আশা ভোঁশলে, হৈমন্তী শুক্লার মতো উপমহাদেশের জনপ্রিয় ও কিংবদন্তিতুল্য শিল্পীরাও।
সম্প্রতি তাঁকে মরণোত্তর একুশে পদক এ ভূষিত করা হয়েছে।
১৯৯০ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর অকালে ঝরে যায় বাংলা গানের এই মেধাবী ও অসাধারন প্রতিভা।
নতুন প্রজন্মকে আমরা আজও এমন একজন গীতিকার সম্পর্কে জানাতে পারিনি অথচ তাঁর লেখা গান এখনও দেশসেরা কণ্ঠগুলো গেয়ে থাকেন। শ্রদ্ধাঞ্জলি।
-- মেসবা খান


মোবাইল

 মোবাইল তোমার জীবনকে দ্রুত ফুরিয়ে দিচ্ছে।

তোমাকে সময়ের গুরুত্ব অনুভব করতে দিচ্ছে না।
তোমার বিশ্রামের গভীর রাত গুলোকে সন্ধ্যেতে পরিণত করেছে।
একবার ফোনটা ধরলে নেশার মতো অনিচ্ছা সত্ত্বেও বেশ খানিকক্ষণ স্ক্রীন স্ক্রোল করে চলেছো।
খেয়াল করে দেখবে, তুমি আগের মতো পেপার পড়ছো না, বই ওল্টাচ্ছো না এমনকি টিভি দেখাও কমিয়ে ফেলেছো।
তুমি আগের মতো কথাও বলছো না, মনের অনুভূতি ভাগ করে নিচ্ছ না।
তোমার অনুসন্ধান করার সব সূত্র শুধু মোবাইল হয়ে গেছে।
আড্ডায় উপস্থিত আছো কিন্তু আড্ডা দিচ্ছ না, মূলত ফোন ঘাঁটছো।
আলোচনায় উপস্থিত থাকলেও উদাসীন থাকছো।
তোমার যেন নতুন আর কিছুই করার, শেখার বা জানার নেই।
এবং এই সবের মধ্যে তুমি তোমার সারাটা দিন মোবাইলের আবর্তে কাটিয়ে ফেলছো, যা তোমায় বুঝতেই দিচ্ছে না কিভাবে দিনটা শেষ হয়ে যাচ্ছে।
আর এটা বুঝতে যে একটা দিনে কতটা সময় আদতে থাকে বা কতটা সময় তুমি কাজে লাগাতে পারো, কিন্তু কাজে লাগাচ্ছ না, জাস্ট একটা কাজ করো। একটা দিন জাস্ট ফোনটা বন্ধ করে সেটার সংস্পর্শ থেকে ২৪ ঘন্টা দূরে থাকো। তুমি আদতে অনুভব করবে ঠিক কতটা সময় সারাটা দিনে রয়েছে। তুমি অনুভব করবে যেন সময়ই কাটছে না। তুমি অনুভব করবে একটা দিন আদতে ঠিক কতটা বড়। আর তুমি এটাও উপলব্ধি করবে ঠিক কতটা আসক্ত তুমি মোবাইলে হয়ে পড়েছো, যখন থেকে থেকেই মনে হবে ফোনটা দেখলে ভালো হয়।
পরীক্ষা করে দেখে নিতে পারো। কারণ এভাবে জীবনকে অসাড়ভাবে দ্রুত ফুরিয়ে লাভ নেই। একটা সময় দুনিয়াতে নেশা সৃষ্টি হয়েছিল। পরে নেশামুক্তি কেন্দ্র। এই মোবাইলও অদূর ভবিষ্যতে তোমাকে সাইকো পেসেন্ট বানিয়েই ছাড়বে। তোমাকেও তখন রিহ্যাবের সাহায্য নিতে হবে।
সেটা যাতে এই জন্মে না করতে হয়, এখন থেকেই সচেতন হও।

https://www.facebook.com/100069976934572/posts/817367270605830/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

মুই রাধা মইরা যাইমু

 মলয়বাবু গলাটা আস্তে করে বললেন -"ফোনটা কাটলে কেন?"

সরলাদেবী আগের থেকে গলায় একটু জোর এনে বললেন " বৌমা আপিস বেরাচ্ছিল,টিফিনটা দিলাম!"
মলয়বাবু একটু মজা করে বললেন " তাই গলায় এতো জোর!"
সরলাদেবী খিলখিল করে হেসে বললেন " লজ্জা লাগে না এই বয়সে এরকম ফোনে কথা বলতে!" মলয়বাবু বললেন " এই বয়সে প্রেম করতে ভালোই লাগে বলো!"সরলাদেবী লজ্জায় লাল হয়ে যাচ্ছেন। ফোনের ওপার থেকেই মলয় বাবু বেশ বুঝতে পারছেন সেটা!
এই লজ্জায় লাল মুখটা দেখতে বড্ড ভালোবাসতেন মলয়বাবু ।সরলাদেবী অল্প বয়সে কথায় কথায় লজ্জা পেতেন । চোদ্দো বছরের ছোট ছিলেন সরলাদেবী মলয়বাবুর থেকে।বাচ্চা বউ - আদরে, আবদারে বুকে আগলে রাখতেন।
মলয়বাবু খেয়াল করলেন ওপাশে সরলাদেবী চুপ। " কি গো শুনছো? " সরলাদেবী বললেন " হমম " মলয়বাবু বললেন " চুপ কেন? " সরলাদেবী আলতো করে বললেন " রান্না করছি তো, কানে ফোন দিয়েই রান্না করছি!এক্ষুনি দিদিভাই আসবে স্কুল থেকে, এসেই খিদে পেয়ে যায় ওর !"
একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে মলয়বাবু বললেন " কত খাটনি হয় তোমার না গো?" সরলাদেবী গলায় আদর এনে বললেন " তুমি ফোন করলেই সব ক্লান্তি চলে যায়।, আর রান্না করতে ভালোই লাগে। আরও ভালো লাগে যখন ওরা খেতে বসে থালা চাটে!"
আজ তিনদিন হলো বুকে বড্ড ব্যথা। রাতে ঘুষঘুসে জ্বর আসে। কিচ্ছু কাজ করতে ইচ্ছে করে না। কিন্তু করতেই হবে। কেউ জোর করেনি,সরলাদেবী নিজের থেকেই করেন। ডাল টা নামিয়ে কড়াই বসালেন মাছের ঝোলটা করবেন বলে!এটুকুতেই হাঁপিয়ে যাচ্ছেন। আর কানে চেপে কথাও বলতে পারছেন না। তাই বললেন " শোনো না ফোনটা রাখি, তুমি ওষুধ গুলো ঠিকঠাক খেও,শেষ হওয়ার আগেই ছোট খোকাকে বোলো, নিজের যত্ন নিও!
ফোনটা রেখে চেয়ারে এসে বসে পড়লেন মলয় বাবু।মাস আটেক আগে স্ট্রোক হলো সেই সুযোগ নিয়ে ছেলেগুলো ভাগ করে দিল দুজনকে ! একসাথে দুজনকে রাখা সম্ভব নয় ওদের।বড় ছেলের বউ চাকরি করে আট বছরের মেয়ে আছে তাই মাকে ওদের চাই। আর বোকা মা সেই আবদার ফেলতে পারেনি। আর ছোটটার সদ্য বিয়ে হয়েছে। তাই বাবা ওখানেই থাক।সুন্দর ব্যবস্থা।
এই ছেলেদেরকেই নাকি দুজনে মিলে ভিটে, মাটি, টাকা শেষ করে মানুষের মত মানুষ করেছেন! বুকটা ভার হয়ে গেল মলয়বাবুর। ইচ্ছে করে এক ছুট্টে যায় বড় খোকার বাড়ি একবার দেখে সরলাদেবীকে।
এতটা অসুস্থ ছিলেন মলয়বাবু তাই জোর করে বলতেও পারেননি যে " আমি তোদের মা কে ছাড়া থাকতে পারবো না!" আর কোন ভরসায় বলতেন, কি ছিল ওনার জীবনে। যেটুকু সম্বল ছোট খোকার ইঞ্জিনিয়ারিং য়ের সময় শেষ!থাক তাও শেষ বয়সে সরলা মাছ টা দুধ টা পায় ওখানে!
( বাবা গরম জল দিয়েছি বাথরুমে )
ছোট বৌমার চিৎকারে চেয়ার ধরে উঠে পড়লেন মলয় বাবু।
****
"বাবা তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে ওঠো দাদা ফোন করেছিল মায়ের নাকি শরীর ভালো নেই। "- মলয়বাবু শুনছেন দরজায় দাঁড়িয়ে ওনার ছোট ছেলে রথীন বলছে। আজ আট মাস এ বাড়িতেই আছেন উনি, একা। আর ওনার অর্ধাঙ্গিনী বড় ছেলের বাড়িতে। এখান থেকে ঘন্টা তিনেকের পথ।
" বাবা ওঠো তাড়াতাড়ি বেরোতে হবে!" রথীনের কথায় ধৰ্মড় করে উঠে বসলেন মলয়বাবু। তাড়াতাড়ি নেমে দরজা খুলেই বললেন " বেঁচে আছে নাকি শেষ? "
"তুমি কি পাগল নাকি? সুস্থ মানুষ একটু শরীর খারাপ হয়েছে,তোমায় দেখতে চাইছে!আর কিসব কথা বলছো তুমি?" - ধমক দিয়ে বললো রথীন।
" সেই তো, সেই তো, সুস্থই তো ছিল তোদের মা, অসুস্থ তো আমি, এমন হাভাতে অসুখ! সব শেষ করে দিলো আমার, বুকটা খালি করে দিলো!"- একা একাই বলে যাচ্ছেন মলয়বাবু।
রথীন বাবাকে ধরে বললো " বাবা শান্ত হও,নিজেকে শান্ত করে তৈরী হও, এক্ষুনি বেরোবো, মা তোমাকে দেখতে চাইছে!" - বাবাকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো প্রবীণ। ছেলের কাঁধে মাথা দিয়ে ফুঁপিয়ে উঠলেন মলয় বাবু। এতো বড় অসুখের পর উনি আছেন ঠিকই কিন্তু ওনার অর্ধেকটাই তো নেই!
*******
যতীনের বাড়িতে ঢুকতেই মলয়বাবুর নাকে ধূপকাঠির গন্ধ আসলো। উনি বুঝে গেছেন সবটাই।তাও আশা নিয়ে মনে শক্ত করে গাড়ি থেকে নামতেই বড় খোকা যতীন ছুটে এসে বললো " বাবা এতো দেরী কেন করলে, কতবার তোমার নাম ধরে ডাকলো!"
তারপর রথীনকে জড়িয়ে বললো " ভাই সময় দিল নারে!" মলয়বাবু ঘরে গেলেন না। বাইরেই সোফায় বসে পড়লেন। হাত পা কাঁপছে। ওখান থেকে মুখ বাড়িয়ে দেখলেন এক মাথা সিঁদুরে, লাল শড়িতে নতুন বউ লাগছে সরলা কে। সেই আজ থেকে বাহান্ন বছর আগের আঠেরোর সরলা। সারাদিন নুপুর পরে ঝুমঝুম করে ঘুরে বেড়াতো খিলখিল করে হাসতো।কানে চাপা দিলেন মলয়বাবু। চোখ বন্ধ করে আছেন।
নাতনি এসে বললো " দাদুভাই ঠাম্মি এটা দিতে বলেছে তোমায়!"লুকিয়ে টিয়া একটা কাগজ দিল মলয়বাবুকে।
মলয়বাবু কাঁপা কাঁপা হাতে কাগজ খুলে দেখলেন তাতে লেখা -
"কইয়োরে ভ্রমর,কৃষ্ণরে বুঝাইয়া-
মুই রাধা মইরা যাইমু কৃষ্ণহারা ।"
(একটা ছোট গল্প প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছিল লেখাটা। )
🖊অনিন্দিতা_মুখার্জী_সাহা

source: https://www.facebook.com/100083232380990/posts/529774529806955/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

ক্যামেরায় তোলা কোনো ছবি নয়

 এটি ক্যামেরায় তোলা কোনো ছবি নয়।

ছবিটি এঁকেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র হেলাল শাহ্।



সস্তায় বিমান টিকিট কেনার টিপস


১. মঙ্গলবার এবং বুধবার বুক করুন
মঙ্গলবার এবং বুধবার হল বিমান টিকিট কেনার সেরা দিনগুলির মধ্যে একটি। বেশিরভাগ এয়ারলাইনস সাধারণত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭:০০ টায় তাদের বুকিং সিস্টেম আপডেট করে। কারণ এয়ারলাইনস জানে যে বেশিরভাগ যাত্রী শুধুমাত্র সপ্তাহের দিনগুলোতে টিকিট বুক করার সময় পান। পরিসংখ্যান অনুযায়ী প্রমাণিত হয়েছে, আমাদের বেশিরভাগই সাধারণত শুক্রবার, শনিবার বা রবিবার টিকিটের দাম দেখেন।
২. আগে বুক করুন, তবে খুব বেশি আগে নয়
অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে, ভ্রমণের তারিখের কমপক্ষে ২১ দিন আগে টিকিট বুক করা উচিত। বেশিরভাগ এয়ারলাইনস তাদের সিস্টেমগুলো এমনভাবে সেট করেছে যাতে যত বেশি সম্ভব টিকিট বিক্রি করতে পারে। তাই, সিস্টেমের মধ্যে একটি নির্দিষ্ট কোটা থাকে সস্তা টিকিটের জন্য। উদাহরণস্বরূপ, কুয়ালালামপুর থেকে লন্ডনের ফ্লাইটের জন্য সিস্টেমে নির্ধারণ করা হয় যে প্রথম ২০ জন যাত্রী সবচেয়ে কম দাম পাবেন। পরবর্তী ২০০ জন মাঝারি দাম পাবেন, এবং বাকিরা সম্ভবত আরও বেশি মূল্য দিতে হতে পারে। সংক্ষেপে, এয়ারলাইন্সের সিস্টেম কুয়ালালামপুর থেকে লন্ডন যাওয়ার সময় তারা যে মার্জিন চায় তার উপর ভিত্তি করে টিকিটের দাম নির্ধারণ করবে।
৩. উড়ার জন্য উপযুক্ত দিন
মঙ্গলবার বা বুধবার উড়ার জন্য টিকিট বুক করার চেষ্টা করুন। বেশিরভাগ এয়ারলাইনস এই দুই দিনকে ‘কম ব্যস্ত দিন’ হিসেবে নির্ধারণ করে বুকিং সিস্টেমের জন্য। এয়ারপোর্টও সাধারণত এই দুই দিন অন্যান্য দিনের তুলনায় কম ব্যস্ত থাকে, বিশেষ করে শুক্রবার এবং রবিবার যখন বুকিং সিস্টেম এবং এয়ারপোর্ট অনেক ব্যস্ত হয়ে ওঠে।
৪. আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য 'বেস্ট ডিল' খুঁজুন
বেশিরভাগ এয়ারলাইনস আন্তর্জাতিক ফ্লাইটের জন্য প্রায় ১১ থেকে ১২ সপ্তাহ আগে 'বেস্ট ডিল' অফার করে। তাই, এই সময়ের মধ্যে নিয়মিত টিকিটের দাম পরীক্ষা করুন।
৫. ছোট এয়ারপোর্ট বেছে নিন
এই পদ্ধতি চেষ্টা করতে পারেন, যা হল প্রধান এয়ারপোর্টে না নেমে গন্তব্যের কাছাকাছি একটি ছোট এয়ারপোর্টে নামা। উদাহরণস্বরূপ, আপনি যদি লন্ডনে যেতে চান, অনেকেই সাধারণত হিথ্রোতে নামেন। পরের বার, হিথ্রোতে না নেমে, হিথ্রোর কাছাকাছি একটি ছোট এয়ারপোর্ট যেমন ম্যানচেস্টারের এয়ারপোর্টে নামার চেষ্টা করুন। তারপর ম্যানচেস্টার থেকে আপনি ট্রেনে করে লন্ডনে যেতে পারেন। এই পদ্ধতি চেষ্টা করুন, এটি সস্তা হওয়া উচিত!
৬. 'কুকিজ' ক্লিয়ার করুন
অনেকে এটা জানেন না। যদি আপনি ৩০ দিনের মধ্যে এয়ারলাইনের ওয়েবসাইটে গিয়ে থাকেন, তাহলে আপনার ল্যাপটপ, স্মার্টফোন এবং পিসি থেকে কুকিজ ক্লিয়ার করুন। কারণ এই কুকিজের মাধ্যমে এয়ারলাইনের বুকিং সিস্টেম মনে করবে যে আপনি বারবার তাদের ওয়েবসাইট দেখেছেন। তাই, বুকিং সিস্টেম একই দাম দেখাবে এমনকি যদি আপনি বহুবার ওয়েবসাইটে যান। কখনও কখনও দাম বাড়তেও পারে! তাই, আপনার ইন্টারনেট ব্রাউজারের কুকিজ ক্লিয়ার করার অভ্যাস তৈরি করুন। আপনি যদি জানেন না কিভাবে তা মুছতে হয়, তাহলে গুগলকে জিজ্ঞাসা করুন!
৭. দাম তুলনা করুন
গুগল করতে এবং আপনি যে টিকিট কিনতে চান তার দাম অন্যান্য ওয়েবসাইটে তুলনা করতে অলস হবেন না। শুধু এক ওয়েবসাইটে ফোকাস করবেন না। আপনি অবাক হবেন, কারণ কখনও কখনও আপনি একই এয়ারলাইনের টিকিট আরও সস্তা পাবেন। এখানে কিছু সার্চ ইঞ্জিন রয়েছে যা আমি প্রায়ই ভ্রমণের জন্য ব্যবহার করি:
1. Skyscanner
2. CheapFlight
3. Momondo
4. Kayak
5. Google Flight
6. Ita Software

source: https://www.facebook.com/100093277786118/posts/412329831886273/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

রাগ নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ছোট একটি শিক্ষণীয় গল্প

ছোট একটি ছেলে খুব রাগী। বাবা কিছুতেই ছেলের রাগ নিয়ান্ত্রণে আনতে পারছেন না।

একদিন বাবা ছেলেকে স্নেহের পরশে কাছে ডাকলেন। একটি পেরেকভর্তি ব্যাগ দিয়ে বললেন,যতবার তুমি রেগে যাবে,ততবার একটি করে পেরেক আমাদের বাগানের কাঠের বেড়াতে লাগিয়ে আসবে। এটি তোমার প্রতি আমার আদেশ।
প্রথম দিনেই ছেলেটিকে ৩৭টি পেরেক মারতে হয়েছে। কারণ,সে এদিন ৩৭বার রেগে গিয়েছিল। ক্রমষ সে উপলব্ধি করছিল,তার রাগ অনেক বেশি-৩৭বার পেরেক মারতে হয়েছে। আরও ভাবল,কষ্ট করে পেরেক মারার চেয়ে রাগ কমিয়ে দেওয়া সহজ। ছেলেটি পেরেক মারার কষ্ট লাঘব করতে করতে রাগ নিয়ন্ত্রণে আনা শিখে গেল। ধীরে ধীরে পেরেক মারা কমতে থাকল এবং অবশেষে একদিন তাকে আর একটি পেরেকও মারতে হলোনা।
বাবা বুঝলেন, তার প্রিয় সন্তান রাগ নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এবার তিনি তাকে প্রতিদিন বাগানের বেড়ার একটি করে পেরেক তুলে ফেলতে বলতেন। বাবার আদেশ পালন করল ছেলেটি। পেরেক তুলা শেষ হয়ে গেলে তার বাবা তাকে বাগানে নিয়ে গিয়ে কাঠের বেড়াটি দেখিয়ে বললেন- দেখ, কাঠে পেরেকের গর্তগুলো এখনো রয়ে গেছে। কাঠের বেড়াটি কখনো আগের অবস্থায় আনা যাবেনা।
যখন তুমি কাউকে রেগে গিয়ে কিছু বলো,তখন তার মনে ঠিক এমন একটা আঁচড় লেগে যায়-যা কখনোই আর মুছে যায়না বাবা। তাই রাগ নিয়ন্ত্রণ করতে শিখো। মানসিক ক্ষত অনেক সময় শারীরিক ক্ষতের চেয়েও ভয়ংকর
প্রচলিত গল্প।

নদীর পাড়ের বাড়ি।

লেখায় :- ফেরদৌস আহমেদ।

 

আমার একটা বাড়ি ছিল পদ্মা নদীর তীরে

সাত পুরুষের জনম গেছে খরকুটার এই নীড়ে
একটুখানি উঠোন ছিল ছোট্ট ক টা ঘর
পাশেই ছিলো বাবা-মায়ের পুরনো কবর।
দক্ষিনে এক পুকুর ছিল কানায় কানায় জল
দখিন হাওয়ার ঢেউ গুলো তার করত টলমল।
হালের দুটো ব*লদ ছিল একটা দুধের গা*ই
ওরা যেন ছিল আমার ভগ্নি এবং ভাই।
ঘরের মুখে ছিল দুটো লাল গোলাপের চারা
সারা বাড়ি থাকতো ফুলের গন্ধে মাতোয়ারা
লাল পুঁইয়ের এক মাচা ছিল আঙ্গিনার এক পাশে
পুঁইয়ের ডগা দুলত সেথায় দক্ষিণা বাতাসে।
তাজমহলের রূপ ছিল মোর সবুজ-শ্যামল নীড়ে
আসতে যেতে পথের পথিক চাইত ফিরে ফিরে।
এই বাড়িতে তেমন সুখেই যাচ্ছিল দিন কেটে
যেমন সুখে শিশুরা সব ঘুমায় মায়ের পেটে।
আমার এ সুখ সইল না ঐ পদ্মা নদীর প্রাণে
বান ডেকে সে ঢেউ তুলে মোর বক্ষে আঘাত হানে।
ঘরবাড়ি সব ভাসিয়ে নিল ভাসালো দুই আঁখি
অশ্রু ছাড়া কিছুই সে মোর রাখল না আর বাকি।
কাল যেখানে ছিল আমার মাথা গোঁজার ঠাঁই
আজ সেখানে জলের খেলা আমার কিছুই নাই।
বাপ মা আমার ঘুমিয়ে ছিল কাল যে মাটির ঘরে
আজ সেখানে নদীর পানি রঙ্গে খেলা করে।
সাত পুরুষের স্মৃতির মতন নাই কো কিছুই আর
নদীর জলে ভাসছে তাদের গোর কবরের হাড়।
নদীর জলে হাড় পেলে কেউ বক্ষে তুলে নিও
গোর হারা মোর মায়রে আবার দাফন করে দিও।
কাল যেখানে থাকত বাঁধা আমার ব*লদ গা*ভী
আজ সেখানে বানের জলে ভাসছে হাবিজাবি।
তাদের সাথে যদিও আমার রক্ত বাঁধন নাই
তবুও ওরা ছিল আমার ভগ্নী এবং ভাই।
আমার সুখে হাসত ওরা কাঁদত আমার দুখে
নিজের বাছুর উপুস রেখে দুধ দিতে মোর মুখে।
হাসিমুখে আমার সাথে টানত ওরা হাল
ভাইয়ের মতোই সঙ্গ দিয়ে আসছে চিরকাল।
আমার এ সুখ হয়নি হজম পদ্মা নদীর চোখে
আঘাত করে আমাদের এই ভাই বাঁধনের বুকে।
হঠাৎ দেখি তার আঘাতে উঠোন গেছে ফেটে
প্রাণ বাঁচাতে দিলাম ওদের গ*লার দ*ড়ি কে*টে।
নদীর জলে ভাসিয়ে দিয়ে সাত জনমের বাঁধন
অবাক চেয়ে শুনছি তাদের হাম্বা সুরের কাঁদন।
বিদায় কাঁদন কান্ধে ওরা আমার দিকে চাহি
আমিও কাঁদি কান্না ছাড়া কিচ্ছু করার নাহি।
জানিনা আজ কোথায় ওরা মরল না কি আছে
কোথায় পাব তাদের খবর সুধাই বা কার কাছে।
নদির জলে পাও যদি কেউ তিনটি ব*লদ গা*ই
বুঝে নিয়ো এরাই আমার হারানো বোন ভাই।
বিনয় করে বলছি তোমার পা জড়িয়ে ধরে
একটু তাদের থাকতে দিও তোমার গোয়াল ঘরে।

source: https://www.facebook.com/100064940670683/posts/932642905577057/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

বল্টু

  ●বল্টু : আমার একটা সমস্যা হচ্ছে। ডাক্তার : কি..? বল্টু : যখন যার সাথে কথা বলি তাকে দেখতে পাইনা। ডাক্তার : কখন এরকম হয়..? বল্টু: যখন ফোনে ক...