Friday, May 31, 2024

নামাজ। কোনো বিকল্প নেই।

 

কাল হঠাৎ ইউটিউবে সার্চ দিলাম... "নামায কেনো পড়তেই হবে?"
"ওযুর জন্য পানি নেই, তায়াম্মুম করেন, তায়াম্মুমের ব্যবস্থা নেই, তায়াম্মুম ছাড়াই নামায পড়ুন।
কিবলামুখী হয়ে নামায পড়তে হয়, কিবলামুখী বুঝতে পারছেন না, যেকোনো দিক হয়েই নামায পড়ুন।
দাঁড়িয়ে নামায পড়তে পারছেন না? বসে পড়েন। বসে না পড়তে পারলে শুয়ে পড়েন।
পরিষ্কার কাপড় পড়ে নামায পড়তে হয়। পরিষ্কার কাপড় না থাকলে প্রসাব, পায়খানা লাগা কাপড় পড়েই নামায পড়েন, কোনো কাপড় না থাকলে উলংগ হয়ে নামায পড়েন।
ট্রেনের প্রচন্ড ভিড়ে ঝুলে আছেন, আযান দিচ্ছে সেই অবস্থাতেই নামায পড়ুন ।
নামায কি জিনিস, কি করে বুঝাই, এক আশ্চর্য ইবাদত যে ইবাদত কোনো অসুবিধা মানেনা।
আপনি অসুস্থ টাকা দিলেন সেই টাকায় হজ্জ করলো অন্যজন। আপনার সাওয়াব হবে।
আপনি অসুস্থ, ফকির কে খাওয়ালেন আপনি রোযার সাওয়াব পাবেন....
হজ্জের বিকল্প আছে, রোযার বিকল্প আছে। নামায এমন এক ইবাদত যার কোনো বিকল্প নেই।
নামায কি জিনিস কি করে বুঝাই?????"
আমার ভাই বোনেরা," নামায পড়ুন"
আপনার জীবনে যাই আসুক, "নামায পড়ুন।"
আপনার জীবনে যতোই খারাপ কাজ করেন না কেন, পরিমাণে যতই বেশি হোক না কেন, "নামায পড়ুন"।
কোন ছাড় নেই।
বোন বলছেন, "আপনি হিজাব পরেন না",
আমি আপনাকে বলছি "নামায পড়ুন"
বোন বলছেন, আমার কাপড় নামাযের উপযোগী নয়।আমি আপনাকে বলছি,"নামায পড়ুন"
ভাই বলছেন, "আমি মদ পান করি"
নামায পড়ুন
"আমি ড্রাগ বিক্রি করি"
নামায পড়ুন
"আমি ড্রাগ সেবন করি"
"নামায পড়ুন"
"আমার একটি মেয়ে বন্ধু আছে এবং আমি তার সাথে রাত্রি যাপন করি। "
"নামায পড়ুন"।
আপনার জীবনে যাই আসুক না কেনো নামায পড়ুন
"ভাই আমি কিভাবে পাপ কাজ করার পাশাপাশি নামায পড়বো? এটি নামাযের প্রতি অসম্মান জনক ও আমার ভন্ডতা প্রকাশ পায়"
আমি বলছিনা এজন্যই আমরা নামায পড়ি কারণ আমরা ভালো না, আমি পাপী, আমরা ভুল করছি।
আপনি তবুও নামায পড়ুন।
আল্লাহ বলেছেন, "নামায অশ্লীল ও খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে।"
"নামায পড়ুন"
কিছু মানুষ বলে আমাকে ভালোপথে আসতে দাও। ইন শা আল্লাহ আমি নামায পড়া শুরু করে দিবো।
বন্ধুরা নামায ব্যতীত আপনি ভালো পথে আসতে পারবেন না। এজন্যই আমরা নামায পড়ি যাতে ভালোপথে আসতে পারি।
আপনার জীবনে যাই আসুক না কেন, আপনি যেখানেই থাকেন না কেন,
নামাজ পড়ুন।
© Copied and collected

ছন্দে সুরে সকল জেলার নাম

 জানিনা কে লিখেছেন,লিখার জন্য তাকে ধন্যবাদ)

ছন্দে সুরে বলছি আমি সকল(৬৪)জেলার নাম
তাল মেলাতে সবার আগে আসলো কুড়িগ্রাম।
প্রধান জেলা ঢাকা থেকে একটুখানি দূর
এক জেলার নাম নরসিংদী আর একটা গাজীপুর ।
জয়পুরহাট ও লালমনিরহাট দুইটা জেলার নাম
রাজশাহীর নাম উজ্জ্বল করছে মিষ্টি স্বাদের আম।
পাহাড় ঘেরা বান্দরবান ও সিলেট খাগড়াছড়ি
ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জে এই অধমের বাড়ি ।
নেত্রকোনা সুনামগঞ্জে আছে ধানের মাঠ
সুন্দর বনের কাছে আছে খুলনা বাগেরহাট ।
ভোলা এবং বরিশালে আছি অনেক নদী
পাবনায় আছে পাগলা গারদ বগুড়াতে দধি ।
পাশাপাশি দুইটা জেলা টাঙ্গাইল জামালপুর
আরো দুইটা জেলা হল কুষ্টিয়া যশোর ।
মনের মত একটা জেলা নাম তার মাগুরা
দন্তন্য তে নারায়ণগঞ্জ নাটোর ও নওগাঁ ।
দন্তন্য তে আরো চারটি জেলা বলতে পারি
নবাবগঞ্জ ও নোয়াখালী নড়াইল নীলফামারী ‌।
গঞ্জ দিয়া মানিকগঞ্জ হয় আরো মুন্সিগঞ্জ
গোপালগঞ্জ হয় হবিগঞ্জ হয় আরো সিরাজগঞ্জ ।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও কিন্তু গঞ্জ দিয়া ভাই
এদের ছাড়া বাংলাদেশে আর কোন গঞ্জ নাই ।
রংপুর এবং রাঙ্গামাটির নামটা রঙে রাঙা
নামের জন্য আরও সুন্দর চাঁদপুর চুয়াডাঙ্গা ‌।
কক্সবাজার নামের জেলা আছে সাগর পাড়ে
পঞ্চগড়টা পড়ছে বন্ধু দেশের এক কিনারে ।
ফেনী জেলার নামটা মাত্র দুইটা অক্ষর দিয়া
সবচেয়ে বেশি অক্ষর লাগে লিখতে বি-বাড়িয়া ।
ছয়টা অক্ষর লিখতে লাগে মৌলভীবাজার
এদিক থেকে শরীয়তপুর সমান তাহার ।
শেষের দিকে এসে দেখি বসছে পুরের মেলা
নামের শেষে পুর লাগানো অনেকগুলো জেলা ।
পুর দিয়ে ভাই শেরপুর আছে আছে পিরোজপুর
মেহেরপুর ও মাদারীপুর আরো দিনাজপুর।
ফরিদপুর ও লক্ষিপুর এই দুই টা জেলার সাথে
পুরের পালা শেষ করিয়া গেলাম বরগুনাতে ।
আসার পথে কুমিল্লা ও ঝালকাঠি সহ
ঘুরে এলাম রাজবাড়ী তার সঙ্গে ঝিনাইদহ ‌।
গাইবান্ধার নাম বাদে থাকে আর মাত্র এক হালি
তাদের মধ্যে একটা জেলার নাম পটুয়াখালী ।
এখন শুধু বাকি আছে তিনটা জেলার নাম
এদের মধ্যে একটা জায়গা হইল চট্টগ্রাম ‌।
সাতক্ষীরায় আর ঠাকুরগাঁয়ে হইল এই গান শেষ
এদের নিয়েই গড়া আমার সোনার বাংলাদেশ ।
(কপি পোস্ট)

সিরিয়াস বাবা

 আমাদের সিরিয়াস বাবা ঘরে ফিরতো রাত সাড়ে দশটায়। বাবা আসার আগ অবধি ঘর টা থাকতো আমাদের রাজ্য। যে যেমন মন চায় করতাম। উচ্চ স্বরে কথা বলা৷ হাসতে হাসতে খিল ধরতো ভাই বোন দের। মাও জোরেই চিল্লাচিল্লি করতো আমাদের।

বাবা ঘরে ঢুকতো সাড়ে দশটায়। সাথে বাজারের থলে। শীতকাল হলে নানা সবজি, ফুলকপি বেগুন, শীম। আর ছোট ছোট নানা রকমের মাছে একটা মিক্স মাছ আনতো। মাছটা মা কাঁচা মরিচ দিয়ে রান্না করতো অদ্ভুত এক সুঘ্রাণ আসতো। মোটা চালের ভাত টা অনায়সে গ্রো-গ্রাসে চলে যেত।
বাবা ঘরে ঢুকলে সব শান্ত হয়ে যেত। বাবা ঘরে ঢুকলে নাকে আসতো, বাবার গায়ে থাকতো তীব্র সিগারেটের গন্ধ। গলির মোড়েই খেয়ে আসত বাবা। আর সারাদিনের ক্লান্ত ঘাম। অদ্ভুত এক গন্ধ। আমার কাছে বাবার পরিচিত কিছু যদি থাকতো তা হলো বাবার সে গায়ের গন্ধ টা৷ সারাজীবনে এই গন্ধ টার মতো পরিচিত কিছুই হয় নি আমার আর।
ছোট থেকে দেখে আসা বাবা সস্তা সেই ডোরা কাটা, দাড়ি দাড়ি কয়েক টা শার্ট।যা কলার গুলো পরিস্কার করতে করতে রোজ প্রায় নরম হয়ে চামড়া উঠে গিয়েছিলো।
তিন টা ফরমাল প্যান্ট। বাবার জিনিস বলতে এইসবেই পরিচিত ছিল আমার।
পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে আমি সবার ছোট। যখন ক্লাস নাইনে উঠি তখন থেকে বাবাকে আমি এইভাবে খেয়াল করতে থাকি। বড় আপু,তার পর দুই ভাই, এরপর ছোট আপু আর এরপর আমি।
আমি বাবার কোলে উঠে আবদার করে পাশে বসেছি এমন কোন স্মৃতি আমার ছিলো না।
আমি মাঝেমধ্যে ভাইয়া আর আপুদের জিজ্ঞেস করতাম তোমার বাবার সাথে কখনো বসে আদর পাও নি?
ভাইয়া হাসতো, এইসব রূপকথার গল্প আসেও কেমনে তোর মাথায়?
বড় আপু রাবেয়া, ধমক দিতো।
-কেন করবে না? বাবা অফিস থেকে ফিরে প্রায় তো কোলে নিয়ে বসতো। তুই তো বাবার কোলে বসে থাকতি বাবার থাল থেকে একটা একটা ভাত খেতি। আর একবার তো বাবার কোলেই খাওয়ার সময় পটি করে দিয়েছিলি৷
বলতে বলতেই ওরা খিলখিল করে হাসে। রাবেয়া আপু আর রুবিয়া আপু।দুজনেই সারাদিন খিল খিল করে হাসে। তাদের ঢেউ ভাঙ্গা চুল গুলো সামনের দিকে চলে আসে। হাসতে হাসতে পেছন নিয়ে যায় এক হাতে অন্য হাতে উড়না টেনে আরেকটু গলার সাথে পেঁচায়।
ওদের মরিচা রঙের গায়ের রং, না ফর্সা না কালো। না সাদা না হলুদ এমন দাত গুলো বের হয়ে আসে।
আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকি।
ভাইয়াদের সাথে কখনো সখনো খাওয়া হয়। তখন খুব মজা হয় আমাদের। সাব্বির ভাইয়া রুবিয়া আপুকে সারাক্ষন বিরক্ত করে। রাবেয়া আপু শান্ত হলেও রুবিয়া আপু ভীষণ মারকাটুরে।
কোন কথায় সে ফেলে না। কথায় না পারলে মাকে বিচার দেবে। মা তার মাথার উপর তোলা কানের পেছনে গুজে রাখা উড়নাটা খুলে আবার গুজে কানের দিকে। মায়ের সোনার বড় রিং কানের দুল টা নড়ে৷ মা হাল্কা চেঁচিয়ে বলবে,
- আহ, এত বড় ছেলে এইসব কি করিস খাওয়ার সময়?
ভাইয়ার এইসবে কিছু হয় না। রুবিয়া আপু উঠে ভাইয়ার পিঠে ধুম করে আবার কিল লাগায়।
ভাইয়া ওর চুল টেনে দেয়ে এঁটো হাতে। সে ফ্লোরে পা বারি দিয়ে কান্না করে। মেজ ভাইয়া আরেকটা বেনী টান দেয় এঁটো হাতে। মা বকতে গিয়ে হেসে দেয়। রুবিয়া আপু ভাত খাওয়ার সময় হাত ধোঁয়ার সময় যে গামলা টা দেওয়া হতো সবাই এঁটো ফেলতো সে গামলায় হাত ডুবিয়ে দুই হাত ওদের শার্টে মুছে দৌঁড় দিতো। ওর পাড়ার দোকান থেকে কেনা সস্তা নূপুর টা ঝুনঝুন করতো।
এইসব কোন কিছুই আমার বাবার দেখা হয় নি। এইসব মজার খাওয়ায় সময় টাতে আমি কখনো বাবাকে দেখি নি।
বাবা যখন বাড়ি ফিরতো আমাদের সবার প্রায় খাওয়া শেষ৷ সবাই একেবারে চুপচাপ। মাও ধীরে কথা বলতো। ধীরে হাটতো। আপুদের কথা গুলো ভলিউম বিহীন হতো।
বাবা যেদিকে থাকতো ভাইয়ারা সেদিকে পা দিতো না। বিরক্তি টেনে অন্য দিকে যেতো৷
মা বসে থাকতো। বাবার সাথে খেতে বসতো। মা ভাতের হাঁড়ির পাশে পিরা নিয়ে বসতো। আমাদের সেমি পাকা সিমেন্ট উঠে যাওয়া এ্যাশ কালারের ফ্লোরে একটা সাদা চালের বস্তা বিছানো থাকতো। বাবা মাদুরে বসতো। বাবার পাতে তরকারি তুলে দিতো মা । বাবা মায়ের সাথে হাল্কা কথা বলতো। আসলে মায়েই বলে যেত বাবা শুধু হু-হু করতো।
আমাদের সারাদিনের ফারমাশেয় যা মাকে বলে বলে আমরা বিরক্ত করে ফেলি, মা বিরক্তি নিয়ে চেঁচিয়ে উঠতো। সেগুলো মা আবার আস্তে আস্তে বলতো বাবাকে। কার স্কুলের বেতন দিতে হবে, কার টিউশনের ফি লাগবে,কার মডেল টেস্টের টাকা লাগবে, এইসব মা বলতো। কার জুতা লাগবে। নতুন ড্রেস লাগবে।
মা আস্তে আস্তে বলতো।
সামনে কারো বিয়ে থাকলে,কেউ বেড়াতে আসবে বললে।
মোট কথা সব খরচের একটা সামারি থাকতো, খুব সফট ভয়েসে।
প্রতিদিন বলতে পারতো না। কোন কোন দিন বাবা বিরক্তি নিয়ে, " আহ! " বলে উঠতো। সেদিন মা একেবারেই চুপ।
দূর থেকে দাঁড়িয়ে আপুরা ইশারা করতো বলার জন্য। মা মাথা নাড়তো। চোখ বড় করে সড়ে যেত বলতো।
বেতন -ফি এইসব মাকে দিয়ে গেলেও। জুতা, শার্ট এইসবের জন্য বাবাকে দেখাতে হতো। আসলেই লাগবে কিনা?
বাবা খাবার শেষে এককাপ গরম দুধ খেত। তার সে বেতের চেয়ারে। পা তুলে বসতো। আমাদের যাদের যা লাগবে তা বাবার সামনে বলতে হতো৷
ব্যাগ বা স্যান্ডেল লাগলে তা ছিড়ে গেলে তা আগে দেখাতে হবে। বাবা যদি বলতো আরো কিছুদিন চলবে তাহলে আমাদের আর্জি সেখানেই শেষ হতো। মা চোখ টিপতো।
যার অর্থ, এখন যা। আমি দেখছি।
বাবা সকালে আটটায় বের হতো। বাবা বের হয়ে গেলে আবারো আমাদের ছন্দে চলতো ঘর। মায়ের হাকডাক। বোনেদের উচ্চস্বরে হাসি।
হঠাৎ আমার মনে হতো বাবা কি সারাজীবনেই এমন? আমাদের মতো মজা করা,হাসি তামশা, এইসব কি কিছুই ছিলো না বাবা? করতো না? বাবার কোন বন্ধুও ছিলো না?
একে একে বোনেদের বিয়ে হয়ে গেল।বোন দের বিয়েতেও বাবার কোন উচ্ছ্বাস ছিলো না। কেমন যেন সেই পরিচিত চিন্তিত আর গম্ভীর মুখ।
একটা পুরানো আয়রণ করা সুতি পাঞ্জাবিতেই বাবার বোনদের বিয়ে পার করে ফেলে। ক্লাবে আমরা যখন হাসিতে, খুশিতে, ছবিতে, নাচানাচিতে ছিলাম। বাবাকে ধরে আনা হয় রান্না ঘরে বাবুর্চির সাথে ঝগড়া করার সময়।
মায়ের সাথে সবার ছবি তোলার ধুম। বাবার কথা, বাবার সাথে ছবি তোলার কথা কারো মনেই নেই।
শুধু মা আলতো করে বলল,
- বিয়ে তো শেষ তোর বাবাকে একটা ছবি তোলার জন্য ডাক কেউ।
ভাইয়ারা বা বোন কেউ কোন আগ্রহ দেখাল না। মাও যেন আবার ভুলে গেল।
আমি ভয়ে ভয়ে গেলাম রান্নাঘরে।
বাবাকে ডাকলাম,
- মা ডাকছিলো, একটা ছবি তুলতে।
বাবা সাথে সাথে কোন উত্তর না দিলেও বাবুর্চিকে বকাবকি শেষ করে আমাকে আলতো করে বলল,
- বেশি ক্ষন থাকতে পারব না। ধুম করে লুকিয়ে ফেলবে জিনিস। চল।
বাবা স্টেজে উঠায় সবাই নেমে গেল। আপু ডেকে সবাইকে তুলল আবার।
সবার ছোট হওয়ায় বাবার রানের উপর আমাকে বসানো হলো। মা পাশে বসল। রুবিয়া আপু পেছনে দাড়াঁল ভাইয়ারা নিচে হাটু ভেঙে। যাতে সবাই এক ফ্রেমে সুন্দর করে আসে।
আমি ভয়ে ভয়ে বসেছিলাম। হঠাৎ বাবা আলতো করে ধরলো আমায়। পিঠে হাত বুলালেন।।আমি স্পর্শ করলাম প্রথম বার বাবার স্পর্শ ত্বকে নয় বুকের ভেতরে কোন একটা দেওয়ালে গিয়ে ধাক্কা লাগায়। কাঁপুনি ছুটায়।
এরপর সবাই আবার মেতে উঠলো মজায়। বাবা ফিরে গেল আবার রান্নাঘরে বাবুর্চি পাহারা দিতে।
সেদিন আমার প্রথম বার মনে হলো আমাদের বেড়ে উঠা, আমাদের জীবন, আমাদের পড়ালেখা, আমাদের এই আনন্দ, নতুন জামা। সব তো বাবার টাকায়৷ বাবার জন্য৷
কিন্তু আমাদের আনন্দে কোন ভাগীদারেই যেন তিনি নেই। তিনি নন।
এক বুক হাহাকার সেদিন বুকে জেগে উঠেছিলো বলে আমি বোধহয় শেষ অবধি ছাড়তে পারি নি বাবাকে। কি যেন একটা উলের কাটার মতো ফুটতো৷
আপুদের বিয়ে হয়ে গেল। ভাইয়ারা কেউ সিলেট কেউ কক্সবাজার চলে গেল চাকরি নিয়ে। বিয়ে করে যে যার বউ নিয়ে।
আমাদের ঘর আবার ঠান্ডা আর নিশ্চুপ হয়ে গেল। কিন্তু সেটা বাবার জন্য না। তখন সবে আমার ইন্টার শেষ করে ভার্সিটি লাইফ শুরু হচ্ছিল। বাবা রিটায়ার্ড হলো।
বাবার আর ফেরার টাইম নেই। বাবা ঢুকলে সব থমকে যাচ্ছে না। বোনেরা ভাইয়েরা এলে প্রথম প্রথম আগের মতো বাবার সামনে চুপ থাকার চেষ্টা করলেও ধীরে ধীরে সব কমতে শুরু করলো।
''বাবা আছে, তো কি হয়েছে?'' সবার মধ্যে এমন একটা ভাব আসা শুরু করলো।
আমাদের কথাবার্তা।হাসি মজা করা বাবা দূর থেকে অবাক চোখে দেখতে দেখতে অভ্যস্ত হয়ে গেল৷
আমরাও অভ্যস্ত হয়ে গেলাম বাবার থাকাটা।
বাবার নিস্পৃহ চাহনী ভেজা শমুকের মতো ধীর হতে লাগলো৷
আমি বাবার সে দাপট চলা কে মিস করতে করতে এক সময় সেটা মায়ায় পরিণত হলো৷ তখন আমিই শুধু বাবাকে আগের মতো সম্মান দিয়ে চলতাম।
বাবা ধীরে ধীরে মিশতে চাইছিলো আমাদের জগতে৷ যে জগতে যিনি কোন কালেই ছিলেন না। তিনি ছিলো রাত সাড়ে দশ টা থেকে সকাল আটটার একজন অথিতি মাত্র।।যাকে সবাই ভয় পেতাম। মাও এখন ভয় পায় না। আমাদের বাসা চেঞ্জ হলো। সেই স্যাতস্যাতে ফ্লোরে এখন চকচকে। মা আর কাজ করে না। কাজের মেয়ে একটা আছে।যাকে তদরাকি করা আর ওর না পারার কাজের ফর্দ শোনায় মূল জীবনে পরিণত হয়েছে।
আমরা এখনো আমাদের সিরিয়াস বাবাকে কোন প্লানে ইনভলব করতে ভুলে যায়। ভাইয়েরা বোনেরা বাড়িতে এলে পার্কে ঘুরতে যাওয়া প্লান হয়। সবাই যখন ঘুরে এলাম মা সহ। বাবা পাড়ার দোকান থেকে ফিরে এসে বলল,
-কোথায় গিয়েছিলে সবাই?
- পার্কে!
বাবা তার চামড়ার জুতো গুলো দরজার পাশে দেওয়ালে হাতের হেলান দিয়ে খুলতে খুলতে বলে,
- কই বললি না তো কেউ। আমাকেও বলতি, আমিও ঘুরে আসতাম।
মা বলে উঠলো, তুমি যাবে না তাই।
বাবা ' ও' বলে তার পাঞ্জাবির পকেট থেকে ছোট মোবাইল টা শোকেসের পাশে রেখে ভেতরে চলে গেল।
আমরা খেয়াল করলাম, বাবা যাবে না এইটা আমরা এমন ভাবে গেঁথে নিয়েছি বাবাকে যাওয়ার জন্য বলার কথা কারো মাথায় এলো না। কারণ বাবা যে আমাদের সিরিয়াস বাবা।
যার এই সংসারে অথিতি হওয়াটা আমাদের জন্যেই ছিলো। সকালে বের হতে রাতে ফিরতো বলে নির্ধিদায় বোনেদের বিয়ে হয়েছে আর পূরণ হয়েছে সব ভাইয়ের পরীক্ষার ফরম।
তারপর একদিন কোন কারণ ছাড়া মা মারা গেল। সবাই বলতে লাগল, আহারে সুখের সময় মরে গেল।
আমি ভাবতাম, মা কি অসুখী ছিলো?
আমাদের পাঁচ ভাইবোন নিয়ে। বাবাকে নিচু স্বরে আমাদের ফরমায়েশ গুলো দেওয়াতে তো মা সংসার খুঁজে নিয়েছিলো৷ মা তো অসুখী ছিলো না৷ মা তার সন্তানদের আদর পেয়েছি। তার সন্তান দের দুনিয়ায় বিশাল একটা জায়গা নিয়ে রেখেছিলো। মায়ের সাথে আলোচনা হতো, তর্ক হতো, সিদ্ধান্ত হতো।
মা জিতে গিয়েছিল। এই ক্ষেত্রে হেরে গিয়েছিল বাবা। কারো দুনিয়ায় কোন জায়গা করতে না পেরে।
আমি আর বাবাই রয়ে গেলাম বাসায়। বাবার পাশে গিয়ে বসে গল্প করা, হাসতে হাসতে খেলা দেখা, সারাদিন কি করেছি এসে বলার ছোটবেলার তীব্র ইচ্ছাটা তখনো কেমন যেন তুষের আগুনের মতো জ্বলতো।
কিন্তু, খাবার খেয়েছেন? আর ওষুধ খেয়েছেন? ওষুধ লাগলে বলিয়েন। এই চক্রে আমি আটকে গেলাম। কোন দ্বার আমি ভাঙ্গতে পারছিলাম না।
একদিন বন্ধুদের সাথে খেলা না দেখে ফিরে এলাম ঘরে। টিভি ছেড়ে বাবাকে ডাকলাম,
- খেলা দেখবেন?
বাবা এক গাল হেসে,
- দেয়, দেখি।
বলে পাশে এসে বসলো।
কাজের মেয়েটাকে বলে মুড়ি মাখিয়ে নিলাম। বাবার সাথে এই বাটি থেকে খাবো ভাবতে পারি নি কখনো।
খেলার উত্তেজনায় যখন চিৎকার করে উঠি, ভয়ে আবার চুপ হয়ে যায়।
বাবা কোন কথা বলে না। যেন খুশিই হয়।
ধীরে ধীরে আমার সিরিয়াস বাবা আমাদের খেলা দেখার পার্টনার হয়ে যায়।
দুজনে চিৎকার করে উঠি। আমার ভয় কাটে৷ বাবার স্পর্শ পেলে আর কেঁপে উঠি না। দুইজন দুইদলের হয়ে ঝগড়া করি।
আমার কাছে যা রূপকথার গল্পের চেয়ে কম নয়।
অফিসে সবাইকে পিজ্জা দেওয়া হয়। আমার টা বাসায় নিয়ে আসি। খেলা দেখার সময় আমি বের করে খেতে নিই। বাবাকে বলি, খাবেন?
বাবা অবাক চোখে বলে,।
-এইটা কি জিনিস, দেয় খেয়ে দেখি।
খেয়ে বলল।
- মজা তো। আগে তো খাই নি।
আমি অবাক হলাম, আমরা ভাই বোনেরা পিজ্জা খেয়েছি অনেক আগে থেকে। মাও খেতো৷ কিন্তু বাবা ফেরার আগে। আশ্চর্য কখনো বাবাকে খাওয়ানো হয় নি। কারণ বাবা তো আমাদের সিরিয়াস বাবা ছিলো৷ আমার বুকে আবার ফুটলো উলের কাটা।
একটা লেদার জ্যাকেট কিনে আনলাম। বাবাকে দেখালাম। বেশ গম্ভীর গলায় বাবা সব দিকে ঘুরিয়ে দেখে বলল,
-দাম কত নিলো?
দাম বলার পর অবাক স্বরে তাকিয়ে বলল,
-এত টাকা দিয়ে এইসব কেনার সাহস হয় কি করে তোদের?
আমি জানি আমাদের সবার সিনিয়াস বাবা কাপড় চোপড়ের মতো তুচ্ছ জিনিসে খরচ করার সাহস করতো না।
বাবা তারপর হাতে দিয়ে বলল, তবে ঠান্ডা লাগবে না। বাইক চালাস তো। আমি তো শীতের সময় যখন ফিরতাম বুকের উপর শক্ত ঢাল দিতাম ঠান্ডা না লাগার জন্য।
আমি জানি,সে কথা। তবে আর উচ্চারণ করলাম না। সাহস হলো না৷ বাবার হাতে জ্যাকেট টা দিয়ে আলতো করে বললাম,
-এইটা আপনার জন্য। পরে দেখেন। ফিটিং হয় কিনা? না হলে চেঞ্জ করে আনব।
বাবা অবাক চোখে তাকালেন আবার৷ অবিশ্বাস্য চোখে। বিশ্বাস হচ্ছে না উনার।
আমি একটু জোরেই বললাম, পরে দেখেন নইলে চেঞ্জ করে আনি৷
উনি পরে দেখলেন।
ড্রয়িং রুমে আয়না আছে তাও উনি বেশ তাড়াতাড়ি করে উনার রুমের দিকে যেতে যেতে বললেন,
-দাঁড়া আয়না দেখে আসি।
তখন না বুঝলেও পরে বুঝেছি। বাবা কেন পালিয়ে গেল সামনে থেকে।অনেকক্ষন পর স্বাভাবিক হয়ে ফিরে বলল,
- কত্ত আরাম রে খোকা এইটা। ভেতরে পুরো গরম উম।
বাবা নাকি ছোট বেলায় আমায় খোকা ডাকতো। বুদ্ধির পর এই প্রথম শুনলাম।
বাবাকে বললাম,
-চলেন আজ বাইকে করে ঘুরে আসি।
বাবা যেন চোখেমুখে বাচ্চাদের উচ্ছ্বাস দেখালো আমায়। বাবা সারাজীবন বাইক চালিয়েছে। বাবাকে প্রথম বাইকের পেছনে বসাতে ভয়েই লাগছিলো আমার।
বাবা আমার পেছনে বসলেই আমি দূরত্বে ছিলাম। হঠাৎ কাঁধে হাত দিয়ে ধরল বাবা। সেই বুকের দেওয়ালে ধাক্কা দেওয়ার মতো অনুভূতি টা। বাবা ধীরে আমার পিঠ ঘেঁসে বসলো।
কাঁপা স্বরে বাবা বলে উঠলো,
-তোকে কখনো আমার বাইকের পেছনে বসিয়ে ঘুরতে নিই নি, তাই না রে খোকা?
আমি জানি না কি ছিলো সে কথায়। অঝোরে ঝড়ছিল আমার চোখ বেয়ে পানি। রাস্তার তীব্র ঠান্ডা বাতাস সে কান্নায় বাতাস লাগিয়ে শীতল করছিল চেহেরাটা যেন জমে যাচ্ছে বরফ, উড়ে যাচ্ছে পানি গুলো।
হঠাৎ খেয়াল করলাম আমার পেছনে ঘাড়ের দিকে কিছু অংশের শার্টটা কেমন যেন ভেজা ভেজা লাগছে।
আমি নিঃশব্দে বাবার মনের শব্দ গুলো শুনছিলাম। যেসব বাবারা সন্তানের জীবন বানাতে নিজের জীবন হারিয়ে হয়ে যায় সিরিয়াস বাবা।

source: https://www.facebook.com/61555758508424/posts/122126293706191950/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

বিশ্বাস

 গতকাল রাতে চুপি চুপি আব্বার শার্টের বুকপকেটে একটা সিগারেট লুকিয়ে রেখেছিলাম। তারপর থেকে অপেক্ষা করছি কখন আম্মা, আব্বার শার্ট গোছাতে গিয়ে সিগারেট খুঁজে পাবেন। আর তারপর আব্বাকে কথা শোনাবেন। আর তারপর দুজনের মধ্যে ঝগড়া লেগে যাবে।

আমার বহু বছরের ইচ্ছা আব্বা আম্মা দুইজনকে ঝগড়া করতে দেখবো। এজন্য এখন অব্দি অনেকবারই অনেক প্ল্যান করেছি। কিন্তু প্রতিবারই আমার প্ল্যান ভেস্তে গিয়েছে। তবে এবার আমি বেশ আশাবাদী। আমি নিশ্চিত আব্বার পকেটে সিগারেট পেলে আম্মা বাসায় তুলকালাম বাঁধিয়ে দেবেন।
সন্ধ্যাবেলা আমি রুমে বসে "Oggy and the Cockroaches" দেখতে ছিলাম। এমন সময়ে আম্মা আমাকে ডাক দিলেন। আমার বেডরুম থেকে আব্বার বেডরুমের দিকে ছুটে গেলাম। দেখি আব্বা আম্মা দুজনেই দাঁড়িয়ে আছেন। আম্মার এক হাতে সিগারেট, অন্য হাতে আব্বার শার্ট ধরে রাখা।
আম্মাকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে খুব খুশি হয়ে গেলাম। বুঝতে পারলাম বাসায় আব্বা আম্মার মধ্যে আজ একটা বিরাট ফাটাফাটি হবে। অবশেষে এতোবছর সাধনার পরে আব্বা আম্মাকে ঝগড়া করতে দেখবো। খুশিতে মনে মনে বলে উঠলাম,
"আমি ফালাক, আমি তো চালাক।"
কিন্তু আম্মা আমাকে অবাক করে দিলেন। তিনি আব্বাকে কিছু না বলে আমার কান ধরে জোরে একটা ঘুরান্টি দিয়ে বললেন,
- তোর আব্বার শার্টের বুকপকেটে তুই সিগারেট কেন রেখেছিস?
- আম্মা বিশ্বাস করো আমি রাখি নাই। আব্বা মনে হয় গোপনে গোপনে....
আমি কিছু বলার আগেই আম্মা ধমক দিয়ে বললেন,
- তুই জানিস না তোর আব্বা সিগারেট খায় না। তারপরও তুই এমন দুষ্টুমি কেন করিস?
আব্বা তখন আমার দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছেন। আব্বাকে হাসতে দেখে আমার মনে পড়ে গেল; আমি চুরি করে আম্মার অনেক পুরাতন ডায়েরি পড়েছিলাম। সেখানে আম্মার হাতের গোটা গোটা অক্ষরে লিখা ছিল,
"উনি আজ আমার হাত ধরে আমাকে কথা দিয়েছেন, কখনোই সিগারেট খাবেন না। উনার চোখে তাকিয়ে আমি অনুভব করেছি, উনি আমার বিশ্বাস ভঙ্গ করবেন না। মানুষটাকে আমি প্রচন্ড বিশ্বাস করি।"
চিঠিতে লেখা কথাগুলো মনে পড়তেই বুঝতে পারলাম, পুরো দুনিয়া যদি আমার আব্বার বিপরীতে থাকে; তবুও আম্মা আব্বার উপর থেকে বিন্দুমাত্র বিশ্বাস হারাবেন না।
★বিশ্বাস
- আবরিশাম ফালাক

https://www.facebook.com/100069016268676/posts/719312223712647/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

বউ না থাকলে

 কার লেখা জানিনা ; তবে বউ না থাকা কোন মহাপুরুষেরই হবে মনে হয়

$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$$
বউ না থাকলে,
একটা ছোট্ট হারপিক অন্তত দশ বছর চলতে পারে...
বউ না থাকলে,
একটা রুম ফ্রেশনারে সারা জীবন চলে যায়...
বউ না থাকলে,
একটা ঘর মোছা ন্যাতা অন্তত পাঁচ বছর টেকে...
বউ না থাকলে,
একটা পাতি দাঁতের ব্রাস দু বছর অব্দি চলে...
বউ না থাকলে,
ডিওর কোনো প্রয়োজনই নেই..
বউ না থাকলে,
তোয়ালে কেনার প্রশ্নই নেই। একটা গামছাই যথেষ্ট। পা মোছা গামছা, হাত মোছা তোয়ালে, মুখ মোছা টিস্যু, পিঠ মোছা টাওয়াল ইত্যাদি সমস্ত বিভাজন একটা সুতির গামছাই মেটাতে পারে।
বউ না থাকলে,
জল আর উইল্কিনশন ব্লেডেই দিয়েই দাঁড়ি কামানো যায়। ফোম লোশন ইত্যাদি নিশ্চিন্তে ভুলে যেতে পারেন...
বউ না থাকলে,
এরিয়াল, সার্ফ এক্সেল ইত্যাদির প্রয়োজন হয় না। পাঁচ টাকার রিনের গুড়ো তিন মাস চলবে...
বউ না থাকলে,
হিম্যান ওম্যান শিম্যান ইত্যাদি বিভাজনের প্রশ্ন ওঠে না। জুই ফুল গন্ধ শ্যাম্পুও অবলিলায় গায়ে মাথায় মাখা যায়... লাল লাইফবয় সাবানও খুশিতে মাখা যায়... গায়ে বা মাথায়।
বউ না থাকলে,
কোলগেটের গুঁড়োতেই কাজ চলে। নুন দেওয়া, চারকোল ঠোসা, লবঙ্গ পেষা, ফ্লোরাইড, ভিজিবল হোয়াইট ইত্যাদি পেষ্টের দরকার হয় না...
বউ না থাকলে,
জামা প্যান্ট ইস্ত্রি করানোর খরচ শূন্য. তাছাড়া ইস্ত্রি লাগে এমন জামাকাপড় কেনারও প্রয়োজন নেই। পাতি টেরিকটের শার্টেও "ও লাভলি" বলার লোক প্রচুর আছে, সবাই যদিও স্বীকার করে না শিকার হবার ভয়ে...
বউ না থাকলে,
আত্মীয় অনাত্মীয় আপ্যায়নের খরচ খুব কম...একটা ঝাল চানাচুরের প্যাকেটেই দশটা আপ্যায়নের কাজ চলে, মিষ্টি চানাচুর অনেকেই ভালো খান। সেইজন্যই ঝাল ভাবলাম...
বউ না থাকলে,
কেবল কানেকশন লাগে না। ইউটিউব আর টোরেন্ট লিঙ্ক যথেষ্ট.. আর মাঝে সাঝে বড়দের সিনেমা...
বউ না থাকলে,
হিট মর্টিন গুডনাইট অল আউট লাগে না। ডেঙ্গু ম্যালেরিয়ারও ভয় নেই। জানলাই খুলবো না তো মশা আসবে কোত্থেকে... তাছাড়া মশার পছন্দসই ইন্ডোর আগাছাও বাড়িতে থাকে না, বউ না থাকলে...
বউ না থাকলে,
ধুপকাঠি, নকুলদানা, বাতাসা, গুজিয়া, আমিষ নিরামিষ বাসন ইত্যাদি বাবদ জিরো এক্সপেন্স...
বউ না থাকলে,
ইকোপার্ক নিকোপার্ক নলবন নানা ইকো রিসোর্ট ইত্যাদি যেতে লাগে না। বুড়ো আমগাছ তলায়, আরো জনা দুই বউছাড়া বন্ধুর সাথে বসে বিশ্বভ্রমনের সুখ পাওয়া যায়! টেকনিকটা জানতে হবে শুধু...
বউ না থাকলে,
একবার মশারি টাঙালে অন্তত একমাস খোলার দরকার নেই। ধার গুটিয়ে গুটিয়ে ঠিক চালিয়ে নেওয়া যায়.. বছরে দুবার বিছানার চাদর আর বালিশের ওয়ার পাল্টানো যথেষ্ট...
বউ না থাকলে,
বাজারে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ডালসেদ্ধ ঘি দিয়ে আর কাটা কাতলা পেটি ভাজা খেয়ে একশো বছর সুস্থ ভাবে বাঁচা যায়। দশ রকম শাক, নানা কিসেমর ভাজা, বড়ি সুক্ত সব্জি কাসন আচার যত্তসব..
এবং আরো আরো আরো... প্রচুর আছে এই তালিকার লিষ্ট। বহুজাতিক থেকে আঞ্চলিক ব্যবসা যত, সবই টিকে আছে শুধু নারীদের ভিত্তি করেই। এবং টিকে আছি আমরাও। আমাদের গায়ে গন্ধ নেই, শার্টে রিঙ্কেল নেই, মুখে ব্রন নেই..., এও তো কোনো না কোনো নারীর খ্যাকানির ভয়েই। আমাদের রুপ, শিষ্টাচার, বা আরও যা কিছু পুরুষালি কাজকর্ম সবই তো কোনো না কোনো নারীর জন্যই। কথাতেই আছে না..
বন্যরা বনে সুন্দর
পুরুষেরা নারীর ভয়ে..
ভয়ে? নাকি ভালোবাসায়? নাকি ভক্তিতে? নাকি সবগুলো মিলে মিশেই..?
বড় জটিল এর উত্তর..
বোঝার ক্ষমতা নেই আমাদের.. বুঝে কাজও নেই..
এই বেশ টিকে আছি..🤣😜
(সংগৃহীত)

source : https://www.facebook.com/100003960194653/posts/2954863584655619/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

সাকিব আল হাসান

 নক্ষত্র থেকে ‘সাকিব’ নিজেই এক ক্রিকেট আকাশ

যাকে নক্ষত্র ভাবা হতো, পরে দেখা গেলো সে নিজেই এক ক্রিকেট আকাশ। সাকিব আল হাসান, মোটে তিনটে শব্দ। অথচ নিজেই দেশের ক্রিকেটকে এনে দিয়েছে সহস্র শব্দের উৎসব।
৩৭ এর চেনা সাকিবকে চেনা যাক, একটু ভিন্নভাবে, কিংবা সেই একই গল্পে। যাকে বোঝা দায়, কিংবা সহজেই বোঝা যায়। যে দূর আকাশের তারা কিংবা যেনো পাশের বাড়ির ফয়সাল। যার কাছে ম্যাচ জেতানোর হাজারটা আবদার!
এক সাকিবের জীবনের গল্পের অভাব নেই। গল্প হলেও তো সত্যিই।
প্রায় ৭২ হাজার জনসংখ্যার দেশ ডমিনিকায় একজনের নাম সাকিব আল হাসান। ২০০৯ সালে যখন সাকিব ডমিনিকায় খেলতে গিয়েছিল, তখন এক ছেলের জন্ম দেশটায়। সেবার সাকিবের খেলা দেখে জনৈক ভদ্রলোকের এত ভালো লেগে গিয়েছিল যে উনি ছেলের নাম রেখে দিয়েছেন ‘সাকিব আল হাসান’।
প্রায় ১৫ হাজার কিলোমিটার দূরের ডমিনিকা থেকে দুই হাজারেরও কম কিলোমিটারের কাশ্মীরে ফিরে যাই। সাকিব নিজেই পুরনো এক সাক্ষাৎকারে সাকিব বলেছিলেন, পরিচিত একজন একবার কাশ্মীর যায়৷ কাশ্মীরের প্রত্যন্ত অঞ্চলে একজনের ঘরে ঝোলানো ছিল সাকিবের ছবি। ক্যারিয়ারের মাঝপথে এই ছবি কিংবা কথাগুলো সাকিবকে বেশ অনুপ্রাণিত করেছিল।
এক বন্ধুবর ক্রীড়া সাংবাদিকের মুখেই শোনা। কাশ্মীরে সাকিবের প্রতি আবেগটা আসলেই অন্যরকম। কাশ্মীর ট্যুরে যে গাড়িতে তিনি ঘুরছিলেন সেই গাড়ির চালক স্পোর্টস রিপোর্টার শুনেই তার কাছে সাকিবের কথা জানতে চাইলেন। বহুবার সাকিবের সংবাদ সম্মেলন কাভার করা হয়েছে শুনেই তাঁর সে কি আবেগ। সঙ্গে সঙ্গে ১০ বছরের ছেলেকে ফোন। বললেন, বাবা তোমার পছন্দের ক্রিকেটার সাকিবের কাছাকাছি গিয়েছিল এমন একজন আমার গাড়িতে চড়ছে।
শুধু তিনি নন। ঘোড়সওয়ার তরুণটাতো আরও আবেগী। 'সাকিব স্যার' সম্বোধন ছাড়া বাংলাদেশের মহাতারকার নামটা একবারও শুধু সাকিব বলে উচ্চারণ করেননি।
মাগুরা থেকে পাশের কাশ্মীর কিংবা সূদুর ডমিনিকা। এক জীবনে সাকিব আর কী চাইতে পারতেন?
শুধু সাধারণ সমর্থকরা? সাকিবকে কিংবদন্তী মানেন, যাঁদের সঙ্গে খেলেন তারাও। কিংবদন্তীদের চোখেও সাকিব কিংবদন্তী। এই তো সদ্য শেষ হওয়া বিপিএলে আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ব্যাটার বাবর আজম মুগ্ধ হয়ে করেছেন সাকিব বন্দনা। একই দল রংপুর রাইডার্সের আরেক অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবীও সাকিবকে মেনেছেন সেরা।
এমনকি যুব দলের ক্রিকেটরাও মুগ্ধ এক সাকিবে। এইতো সদ্য ২০ না পেরোনো যুব এশিয়া কাপ জেতা দলের জিসান আলম কিংবা পেসার রোহানাত দৌলা বর্ষণ প্রথমবার বিপিএলের মঞ্চে নেমে সাকিবকে খুব কাছ থেকে দেখেও প্রকাশ করেছেন উচ্ছ্বাস।
গল্প ছিল আরো। ইয়ান স্মিথের ক্রিকেটীয় ক্যারিয়ারটা ঠিক সেই অর্থে বড় হয়নি৷ তবে কমেন্ট্রি বক্সে মাইক্রোফোন হাতে বেশ নামই কামিয়েছেন৷ হুট করে নেলসনের ভদ্রলোককে মনে পড়ার কারণ বিশ্বকাপের একটা ম্যাচে কমেন্ট্রির জন্য।
সাকিব রান করেন, উইকেট নেন, দারুণ ফিল্ডিং করেন। ২০১৯ বিশ্বকাপে সর্বেসর্বা এই অলরাউন্ডার৷ একটা বিশ্বকাপে এভাবেও পারফরম্যান্স করা যায়, এই নতুন এক অবাক হওয়া ব্যাপারের সাথে সাকিব সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। বাউন্ডারি সীমানার কাছে খুব চেষ্টা করেও সাকিব একটা বাউন্ডারি বাঁচাতে পারেননি৷ সাকিবও পারেনা, এমনও হয়! ইয়ান স্মিথ অবাক হয়ে, মাইক্রোফোন হাতে বলেছিলেন, 'সাকিব ইজ অফিসিয়ালি হিউম্যান...'
নানান ইস্যুতে সাকিবের যা অবস্থা তাতে মনে হচ্ছে, এই যে সাকিবকে অনেকেই বিশেষণে বিশেষায়িত করতে সুপারম্যান, সুপার হিউম্যান বলেন সত্যিই কী তাই? মাঝেমধ্যে মনে হয়, কাড়ি কাড়ি টাকা থাকার পরেও সাকিব নিঃসঙ্গ। নিজের অনেক কথাই বলতে পারেননা। বড় তারকাদের এমন হয়, বোঝা যায় না, বুঝতেও দেয় না। সাকিবের চেয়ে বড় তারা আর কে আছে এদেশের ক্রিকেটে? সাকিবকে বোঝে সেই সাধ্যি কার? ইয়ান স্মিথ না হয়, একটা বাউন্ডারি বাঁচানোর আক্ষেপ দেখে বলেছিলেন, 'সাকিব ইজ অফিসিয়ালি হিউম্যান...' সত্যিই তাই?
ক্রিকেটার সাকিব মাঠের তর্কাতীত সেরা, দেশের সেরা অ্যাথলেট বললেও ভুল হবে কী? স্বাধীন বাংলাদেশের সেরা অ্যাথলেট মানুষ হিসেবে কেমন? খুব খারাপ? প্রায়শই তো আলোচনায় তা উঠে আসে। তবে সাকিবের ভালো কাজগুলো কেন জানি, সামনে আসতেই চায় না।
বিকেএসপির কেউ অসুস্থ, ইনজুরিতে পড়লে সাকিব এগিয়ে আসেন। আগেপরে অনেক ঘটনা আছে। কয়েক মাস আগের রামিমের ঘটনা। অনূর্ধ্ব ২১ হকি প্লেয়ার রামিম ওমানে খেলতে গিয়ে লিগামেন্টের ইনজুরিতে পড়লে সাকিব শোনা মাত্রই এগিয়ে এসেছেন।
এর আগে চট্টগ্রামে এক সিরিজে দুই ম্যাচে তিনটি পুরস্কার পেয়েছিলেন সাকিব। তবে চট্টগ্রাম ছাড়ার আগে একটা পুরস্কারের অর্থ জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামের মাঠকর্মীদের দিয়ে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
এমনকি বিসিবিতে কর্মরত অফিস সহকারী, পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং মাঠকর্মীদের ঈদ উপলক্ষে ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন সাকিব।
কোভিডের সময়ে নানান সাহায্য করেছেন, নিজের রেকর্ডগড়া ব্যাট নিলামে তুলেছেন, ক্যান্সার ফাউন্ডেশনের ঘটনা তো একেবারে সবশেষ।
গল্পের মতো কিন্তু সত্যি…
পিটার রোবাক, ভদ্রলোক স্বীকৃত ক্রিকেটে রান করেছেন প্রায় ২৫ হাজার। ক্রিকেটার-কোচ-সাংবাদিক-লেখক পরিচয়ের অভাব নেই অক্সফোর্ডের এই মানুষটার। তবে এক যুগ আগে স্মৃতি হওয়া ভদ্রলোককে মনে পড়ার কারণ শচীন টেন্ডুলকার। ক্রিকেটের প্রতিশব্দ এসআরটির জনপ্রিয়তা দেখে অবাকই হয়েছিলেন...
অবশ্য অবাক না হয়ে আর যাবেন কই? শিমলা থেকে দিল্লি যাচ্ছিলেন, ট্রেন থামল শচীনের জন্য। শচীন তখন ৯৮ রানে অপরাজিত। জীবন ইনিংসে ৫৫ বছরেই কেপটাউনে স্মৃতি হওয়া রোবাক লিখেছিলেন, 'সবাই অপেক্ষা করছিল শচীন সেঞ্চুরি করবে বলে... এই জিনিয়াস ভারতে সময়কেই থামাতে জানত...'
হুট করে পিটার রোবাক-শচীন টেন্ডুলকার এসেছেন সাকিব প্রসঙ্গে। এইতো গেলো বছর, চেমসফোর্ডে কমেন্ট্রি বক্সে বসা নেইল ও'ব্রায়েন যা বললেন, তা ছিল এমন... 'সাকিব অধিনায়ক ছিল আগের এক বিপিএলে। সাকিবের সঙ্গে মিরপুরে ব্যাটিং করছিলাম। ২৫ হাজার মানুষ ম্যাচটা দেখছিল। সাকিব আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সবাই চলে গেলো...'
ভিন্ন আরেকটা ঘটনা। জনপ্রিয় উপস্থাপক বিক্রম সাঠে, শচীন নিয়ে একটা দারুণ বই লিখেছিলেন। বইটার নামের বাংলা তর্জমা হচ্ছে, 'শচীন যেভাবে আমার জীবন ধ্বংস করেছে... কিন্তু জীবনের সব ক্রিকেটীয় পরীক্ষায় পাস করার অনুমতি দিয়ে গেলো...'
সাকিব এই বাংলায় সময় থামাতে পারেনি, কাউকে জীবনের সব ক্রিকেটীয় পরীক্ষায় পাস করার অনুমতি দিয়ে যেতে পারেননি। তবে অনেকের শৈশবের, কৈশোরের ক্রিকেট আনন্দের নাম হয়েছেন বটে। বাড়িয়ে বললাম কী?

source : https://www.facebook.com/100064733080453/posts/839060238261738/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v

বাবার কান্ড

 চাকরি হবার পর প্রথম মাসের বেতন এনে ভাবলাম মাকে দিবো।কারণ মা-ই কঠোর মেহনত করে আমায় পড়াশোনা করিয়েছেন।বাবা সেই শুরু থেকেই বাঁধা দিতেন। বলতেন, তার সঙ্গে রাজ মিস্ত্রীর কাজ করতে।এতে করে দুটো পয়সা বেশি আসবে ঘরে। নিজেদের উন্নতি হবে।

সবাই তো আর সমান বোঝে না।বাবা হয়তো কাজের বিনিময়ে উপস্থিত ক'টা টাকা বেশি ঘরে আসবে এই স্বপ্নই দেখছিলেন। কিন্তু মা স্বপ্ন দেখেছিলেন আকাশ সমান। তিনি বাবার অমতে গিয়ে আমায় স্কুলে দিলেন। মায়ের গয়না ঘাঁটি,নানার দেয়া সামান্য টাকা এসব বেচে দিয়ে যা টাকা এলো তা বাড়িয়ে বলিয়ে যা হয়েছিল তা আমার পড়াশোনার পেছনে ঢাললেন। মাধ্যমিক পর্যন্ত মার কাছ থেকে খরচ নিতে হতো আমার। উচ্চ মাধ্যমিকের সময় টিউশন পেয়ে গেলাম। নিজের খরচ নিজেই চালাতে পারতাম তখন। বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স হওয়ার পর মাকে মাস শেষে হাজার দুয়েক দিতে পারতাম। পড়াশোনা শেষ হবার পর চাকরি হলো। প্রথম মাসের বেতন পেলাম। এই বেতন আজ মার হাতে তুলে দিবো বলে মাকে খুঁজছি। খুঁজতে গিয়ে দেখি মা পুকুর ঘাটে।কলসি ভরে পানি তুলছে।মার হাত থেকে কলসি নিয়ে খানিক দূরে সেই কলসি সরিয়ে রেখে তারপর বললাম,' চোখ বন্ধ করো তো একটু মা।'
মা অবাক হলো।মার সঙ্গে কখনোই আমি এরকম রসিকতা করিনি। এই জন্যই অবাক হয়েছে।
মা বললো,' কেন? চোখ বন্ধ করলে কী হবে?'
আমি বললাম,' করে দেখো না কী হয়! ভালো কিছুই হবে হয়তো।'
মা চোখের পাতা বন্ধ করলো। এবার মায়ের ডান হাত টেনে নিয়ে সেই হাতে টাকা ভর্তি হলুদ খামটা মুঠোতে পুরে দিয়ে বললাম,' আরো তিন মিনিট পর চোখ খুলে দেখবে এটা কি!'
বলে আমি কলসি নিয়ে ঘরে চলে এলাম।
মিনিট কয়েক পর মাও এলো। মায়ের চোখ জলে ভেজা।আমি জানি এটা দুঃখের জল না। সুখের জল। নিজের পরিশ্রমের স্বার্থকতার পর যে মনে আনন্দ হয়, সেই আনন্দের জল।
মা ঘরে এসে বললো,' এই টাকা দিয়ে আমি কি করবো মহিন? আমাকে দশ টাকা না দিলেও আমি খুশি। তুই এই টাকা নিয়ে তোর বাপকে দে।'
আমার রাগ লাগলো।আমি বললাম,' বাবাকে দিবো কেন? তিনি তো আমায় রাজমিস্ত্রীর কাজে লাগিয়ে দিতে চেয়েছিলেন!'
মা হাসলেন। বললেন,' সহজ সরল মানুষ। সহজ সরল মানুষেরা ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে না।তারা বর্তমান নিয়েই বেশি ব্যস্ত থাকেথাকে। উদ্বিগ্ন থাকে। তাছাড়া আমাদের অবস্থাও তো তেমন ভালো ছিল না।তোর বাপ একা উপার্জন করতো।একা এই সংসারের বোঝা টানতে হতো তার। নিজের কাঁধের ভার হয়তো লাঘব করতে চেয়েছিল সে!'
আমি কোন কথা বলি না।চুপ হয়ে থাকি।
মা বলেন,' তোর বাপের পাঞ্জাবিটা পুরনো হয়ে গেছে। ছিঁড়ে গেছে এক জায়গায়।নিচের সেন্ডো গেঞ্জিটা তো জালের মতো ছোট ছোট ছিদ্র হয়ে গেছে। একজোড়া ভালো জুতো নাই।তোর বাপ নিজের জন্য কিছুই করেনি। হয়তো তোর পড়াশোনার পেছনে তেমন খরচ করেনি। কিন্তু টাকা পয়সা উপার্জন করে যে কিছু ক্ষেত খামার করেছে,ঘরটা বেঁধেছে তা তোর তোর জন্যই রে বাবা। তার নিজের জন্য কিছুই করেনি।বাবারা এমনই রে।মায়েরাও। সন্তান হবার পর তারা আর নিজেদের নিয়ে ভাবে না। নিজেদের সুখের জন্য, শখের জন্য কিচ্ছু করে না।যা করে তা নিজেদের সন্তানের জন্য।এর প্রমাণ তো তোর বাবাই। সে কি ইচ্ছে করলে তার উপার্জিত দিয়ে একটা ভালো জামা, গেঞ্জি,জুতো কিনতে পারতো না? নিশ্চয় পারতো। কিন্তু কিনেনি? এইসব টাকা দিয়ে জমি কিনেছে।ঘর করেছে।তা তোর জন্যই রে বাবা। তার নিজের জন্য না!'
মার কথা আমার ভালো লাগলো।আমি জানি আমার মা কতোটা জ্ঞানী।কতোটা স্বার্থহীন।
এমন লক্ষ্মী মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকলেও মন ভরে যায়।মনে শান্তি আসে।আমি দীর্ঘ দীর্ঘ সময় ধরে মার মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। বয়সে, চিন্তায় এই মুখ ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু মায়া আর মমতায় আজো এই মুখ উজ্জ্বল।লাবণ্যময়।
সেদিন বিকেলেই আমি বাবাকে বললাম,' বাবা, তোমার একটু সময় হবে? তোমাকে নিয়ে আমি বাজারে যেতে চাইছিলাম একটু!'
আমার চাকরি হবার পর থেকেই বাবা আমায় অন্য রকম চোখে দেখে। পছন্দ করে।আমায় গুরুত্ব দেয়।
বাবা না করলেন না। তখনই বললেন,' এখন যাবি?"
আমি বললাম,' হ্যা ‌।'
বাবা বললেন,' আচ্ছা।'
ঘরে গিয়ে বাবা ঘিয়ে রঙা পুরনো পাঞ্জাবি পরলেন। অনেক দিন না কাঁটা চুল আঁচড়ে এলেন। পুরনো স্যান্ডেল তার পায়ে।এক জায়গায় সেলাই করা। ছিঁড়ে গিয়েছিল সম্ভবত।
বাবাকে নিয়ে অটো করে বাজারে গেলাম। তারপর প্রথমেই সেলুনে গিয়ে বাবার চুল কাটালাম। মার্কেটে নিয়ে গেলাম। বাবার জন্য যখন কাপড় বের করি তখন বাবা জোর জবরদস্তি করেন। কিনতে বারণ করেন। বলেন,' আরে আমার তো আছে। শুধু শুধু কেন টাকা খরচ করবি!যখন কাপড় থাকবে না তখন কিনে দিস। '
আমি বাবার কথা শুনি না। পাঞ্জাবি কিনে দেই দুটো।একটা ফতুয়া কিনি। লুঙ্গি কিনি। জুতো কিনি দু 'জোড়া। একজোড়া স্যান্ডেল। একজোড়া চামড়া। তারপর বাকী সব টাকা বাবার হাতে তুলে দেই।বলি,' বাবা, আমার চাকরির প্রথম মাসের বেতন। কেনাকাটা করে এগুলো অবশিষ্ট আছে।'
বাবা টাকাগুলো কাঁপা কাঁপা হাতে নেন। আমার সামনেই দোকানির কাছ থেকে শাড়ি নেন। জলপাই রঙা শাড়ি। খয়েরি আঁচল।জুতো নেন মেয়েদের। চামড়ার জুতো। মাথায় দেয়ার সুগন্ধি তেল নেন।সাবান নেন।শেষে ফেরার সময় বেশি করে মিষ্টি নেন।বাড়ি ফিরে মাকে তিনি নিজ হাতে উপহার দেন।নিজে নতুন পাঞ্জাবি- লুঙ্গি আর চামড়ার জুতো পরে পাড়া প্রতিবেশীর ঘরে মিষ্টি বিলাতে যান।জনে জনে বলে বেড়ান,' আর যাই করো বাচ্চা কাচ্চার পড়াশোনা ঠিক রাইখো। পড়াশোনা করাইয়ো।বাপ মায়ের সম্পদ হইলো তাদের সন্তান।আর সন্তানের সম্পদ হইলো তাদের শিক্ষা দীক্ষা।'
আমার বড় ভালো লাগে বাবার এসব পাগলামি দেখতে। আনন্দে চোখ ভিজে উঠে বার বার।
সময় যাচ্ছে। চাকরি হয়েছে অনেক দিন।বাড়ি থাকতে পারি না। চাকরির সুবাদে দূরে থাকতে হয়। বাবাকে বলি আমার এখানে এসে থাকতে।বাবা আসেন না। বলেন,' গ্রামের মানুষ গুলো কম বোঝে। শিক্ষা দীক্ষার প্রতি এদের মনোযোগ কম।আমি যদি বাড়ি থেকে চলে যাই তবে এদের শিক্ষা দীক্ষার কথা বলবে কে?'
আমি এসব শুনে হাসি।
মা ফোন করে বলেন,' তোর বাপ ইদানিং যা কান্ড করে!'
আমি জিজ্ঞেস করি,' কি করে?'
মা বলেন,'
নিজের কাজ কর্ম রেখে মানুষের কাজ কর্ম করে বেড়ায়।কেউ তার বাচ্চাকে কাজে লাগালে সে গিয়ে বলে,আমি কাজ করে দেই। তোমার ছেলে পড়ুক গিয়ে। তারপর তোর বাবা কাজে লেগে পড়ে।'
শুনে আমার হাসি পায়। আনন্দ হয়।সে যে কি অসীম আনন্দ বুঝাবো কি করে?

source : https://www.facebook.com/100094585744054/posts/269857596177097/?mibextid=rS40aB7S9Ucbxw6v
'

বল্টু

  ●বল্টু : আমার একটা সমস্যা হচ্ছে। ডাক্তার : কি..? বল্টু : যখন যার সাথে কথা বলি তাকে দেখতে পাইনা। ডাক্তার : কখন এরকম হয়..? বল্টু: যখন ফোনে ক...